শিক্ষার প্রাথমিক স্তর হচ্ছে প্রাইমারি শিক্ষা। সেখান থেকেই মূলত শিশুদের শেখার ও মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি হয়। আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেলেও মানসম্মত শিক্ষার দিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। তাই প্রাইমারি শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বাজেট বাড়ানোর দরকার। এ ছাড়া শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে হবে। মান নিশ্চিত করতে হলে তা প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই শুরু করতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও জেলায় ইএসডিওর মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিস্থিতি আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ এবং উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিওর সহযোগিতায় এই সংলাপের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সিপিডির ফেলো নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ-সদস্য চন্দ্র সেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মণ। অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. অরুণাংশু দত্ত টিটো, নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সদস্য সচিব ও ইএসডিও’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামান, সিপিডি ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সংলাপে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। উন্মুক্ত আলোচনার ভিত্তিতে মন্তব্য পেশ করেন গবেষক মো. মোজাহিদুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য চন্দ্র সেন বলেন, ঠাকুরগাঁও এখন শিক্ষার নগর, যোগাযোগ ও বিদ্যুতের নগর। এখানে কোন অভাব অনটন নেই। আইটি পার্কও এখানে দেওয়া হচ্ছে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলও দেওয়া হয়েছে। এখন বেশিরভাগ প্রাথমিক শিক্ষক উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। শিক্ষকেরা সঠিকভাবে পাঠদান চালালে আমাদের ঠাকুরগাঁও সদর খুব অল্প সময়ে শিক্ষার মান উন্নত করে শিক্ষানগরী হিসাবে গড়ে উঠবে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশে বাস্তবমুখী শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে হবে। দেশে উন্নতি করতে হলে, মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার মানের উন্নয়ন বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াতে হবে।
সংলাপে জনসম্পৃক্ত সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন ভূমিকার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও জেলার প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন, জাতীয় বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অন্তর্ভুক্তি, শিক্ষা অবকাঠামো, ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ব্যবস্থা, শিক্ষাদান ও পাঠদান প্রক্রিয়া এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও সুপারিশ বিষয়ে বিভিন্ন সুপারিশমালা উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, অভিভাবক, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সংলাপে অংশ নেন।