প্রেমিক বেকার এ অজুহাতে ৫ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে প্রেমিকা। এটিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না প্রেমিক। প্রেমের ক্ষত সারাতে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করেন। বন্ধুরা তাকে আত্মহত্যার পথ পরিহার করার পরামর্শ দেন। অবশেষে দুধে গোসল করে মনের জ্বালা মিটিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার সুরমান মোল্লা (২২) নামে এক যুবক।
নিজ গ্রামের ৩ শতাধিক মানুষকে সাক্ষী রেখে ২০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেছেন ওই যুবক। শুধু গোসল করেই তিনি শান্ত হননি। গোসল শেষে তিনি গ্রামবাসীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন। এসময় বন্ধুরা সুরমানের গলায় ফুলের মালা দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। সুরমানের এ সিদ্ধান্তকে বন্ধু, স্বজন, আত্মীয় ও গ্রামবাসী স্বাগত জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মুকসুদপুর উপজেলার টেংরাখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে । সুরমান ওই গ্রামের মিজান মোল্লার ছেলে। সে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী।
স্থানীয় ফোরকান মোল্লা বলেন, ট্যাংরাখোলা গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে টানা ৫ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুরমান মোল্লার। গত ২২ সেপ্টেম্বর সুরমানকে বেকারত্বের অজুহাত দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্কের ইতি টানে প্রেমিকা। এতে সুরমান ভেঙে পড়েন। হতাশায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে চান। বিষয়টি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেন। বন্ধুরা তাকে বোঝাতে থাকেন। বেশ কয়েকদিন ধরে বোঝানোর পর সুরমান আত্মহত্যার পথ পরিহারের সিদ্ধান্ত নেন। বন্ধুদের পরামর্শে প্রেমে ব্যর্থতার গ্লানি ঘোঁচাতে গ্রামের ৩ শতাধিক মানুষের সামনে ২০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন। শুধু তাই নয় গ্রামবাসীকে মিষ্টি খাইয়েছেন ও বিতরণ করেছেন। তার এ সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই।
ব্যর্থ প্রেমিক সুরমান মোল্লা বলেন, আমার সঙ্গে ওই মেয়ের ৫ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে আমার বেকারত্ব, অসহায়ত্বসহ সব কিছুই জানত। আমাকে বলত ও অভয় দিত আমার কিছু থাকা লাগবে না। শুধু প্রেম ভালবাসা দিলেই চলবে। কিন্তু কয়েকদিন আগে আমি বেকার, সেই অজুহাতে আমার প্রেমিকা আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের ইতি টেনেছে।
বিষয়টি আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম আত্মহত্যা করব। বিষয়টি বন্ধুদের জানাই। বন্ধুরা আমাকে অনেক বুঝিয়ে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে আনে। তারা দুধ দিয়ে গোসল করে প্রেমের ব্যর্থতা কাটানোর পরামর্শ দেয়। সে কারণে আমি ২০ লিটার দুধ দিয়ে ৩শ' গ্রামবাসীর সামনে গোসল করেছি। শুধু তাই নয় গ্রামবাসীর মধ্যে মিষ্টিও বিতরণ করেছি। জীবনে আর কোনোদিন প্রেম করব না বলে ওয়াদা করেছি। প্রেম না করে এই সময়টি কোনো কাজে ব্যয় করব। সৃজনশীল কাজ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হব। এটি এখন আমার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।