দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর। তীব্র জোয়ারের ধাক্কায় বিভিন্ন জায়গায় উপকূল রক্ষা বাঁধ ভেঙে পড়েছে। হুহু করে লোকালয় ঢুকে পড়ছে সাগরের পানি। প্লাবিত হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
রোববার সন্ধ্যা অথবা মধ্যরাত নাগাদ মোংলা ও খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র। তবে এরি মধ্যে ঝড়ের অগ্রভাগ পৌঁছে যাওয়ায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো ও দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে মহাবিপদ সংকেত দিয়ে বলা হয়েছে, রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় কয়েকটি জেলার দ্বীপ ও চরে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
দুপুর থেকেই দমকা ঝড়ো হাওয়ার শুরু হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাদাবনে ভূমি ভেসে যাচ্ছে কমপক্ষে পাঁচ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে। ডুবে গেছে হিরণ পয়েন্টের বিশ্ব ঐতিহ্যের স্মৃতি ফলক।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর দক্ষিণ চরমোন্তাজ গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে লোকালয়৷ রাঙ্গাবালীর চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চারটি গ্রামে জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে রাঙ্গাবালীর নীচু এলাকাগুলো।
প্রবল জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে কলাপাড়ায় চাকামইয়া ইউনিয়নের বটতলা এলাকার বেড়িবাঁধ পানির ভেঙ্গে গেছে। পানি ঢুকছে পাঁচ গ্রামে। জোয়ারের তোড়ে ধসে পড়েছে চর বালিয়াতলী বেড়িবাঁধের রিভার সাইডের প্রায় ১০ ফুট অংশ।
দুপুর থেকেই রিমালের প্রভাব শুরু হয়ে গেছে সাতক্ষীরায়। নদীতে উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে বাড়ছে পানি। ঝড়ো দমকা হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে উপকুলবাসী।
এদিকে কক্সবাজার সাগর ফুঁসে উঠেছে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করেছে উপকূলে। সাগরে সাথে আবহাওয়ার চরিত্র ও পরিবর্তন হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসা রিমাল আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
এর প্রভাবে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল।
প্রবল এই ঘূর্ণিঝড় সন্ধ্যা অথবা মধ্যরাত নাগাদ মোংলা ও খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এরি মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের পৌঁছে যাওয়ায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো ও দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
এদিকে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে চার হাজার আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং এরি মধ্যে ৫০ শতাংশ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মহিবুর রহমান।