এইসএসসির ফল জালিয়াতিতে জড়িত চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথকে বদলি করা হয়েছে। এখন তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের কলেজ শাখার পরিচালক।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপেনে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে অন্তত পাঁচ বিষয়ে ফল টেম্পারিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারই জেরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে ডাকা হয়েছে নিজের ছেলের ফল টেম্পারিংয়ে অভিযুক্ত নারায়ণ নাথকে। আজ বুধবার তার হাজিরা দেওয়ার কথা।
তদন্ত কমিটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে তদন্ত কমিটির চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্রসহ ১০ জুলাই বিকেলে অভিযুক্ত সচিবকে মাউশি অধিদপ্তরে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (মনিটরিং) প্রফেসর মো. আমির হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়। চিঠিতে নারায়ণ নাথকে বেলা দুটায় অধিদপ্তরে হাজির হতে বলা হয়।
এর আগে আদালত ব্যবহার করে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ঢাকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের রিট করেন তিনি। ওই রিট স্থগিত হয়ে ওই সচিবের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বর্তমান সচিব ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে ওঠা ফল জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এর পরে গত ৪ জুন সেই তদন্ত স্থগিত করার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ তদন্ত কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন। এরপর ওই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার জজ আদালতে আপিল করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।
তারও আগে নারায়ণ চন্দ্র নাথের সন্তানের ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য ‘অবৈধভাবে’ আবেদন করা হয়। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তার ছেলে। এ ঘটনায় মাউশির মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন উইংয়ের পরিচালক আমির হোসেনকে আহ্বায়ক এবং সহকারী পরিচালক (এইচআরএম) আশেকুল হক ও ইএমআইএস সেলের খন্দকার আজিজুর রহমানকে সদস্য করে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। গত ৩ জুন সকালে প্রথমবারের মতো কমিটির দুই সদস্য বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। তদন্ত কমিটি এ সময় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষার মার্কশিট চাইলে তা দিতে পারেনি বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে বেরিয়ে আসে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করেছে দুই পরীক্ষার্থী।
মার্কশিট খোয়া যাওয়ার বিষয়ে পরদিন ৪ জুন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দিদারুল আলম। জিডিতে মো. দিদারুল আলম উল্লেখ করেন, ‘আমার অফিস কক্ষে তিনটি ট্রাঙ্কে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা-২০২৩ এর শিক্ষার্থীদের লক্ষাধিক নম্বরফর্দ রক্ষিত ছিল। গত ১৯ মে সকাল ১০টার দিকে দেখা যায় যে, ওই তিনটি ট্রাঙ্কের মধ্যে একটি ট্রাঙ্কে লাগানো তালা নেই। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান মহোদয়কে লিখিতভাবে অবহিত করি। পরবর্তীতে ৩ জুন বিকাল ৩টার সময় ভাঙা ট্রাঙ্কটি তদন্ত কমিটির নির্দেশক্রমে শিক্ষা বোর্ডের দু’জন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ট্রাঙ্কে শিক্ষার্থীদের দুটি নম্বরফর্দ নেই।’
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।