ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে বিভিন্ন মাদরাসায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হয়েও চূড়ান্ত সুপারিশ না পাওয়া ছয় শতাধিক প্রার্থীর জটিলতা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) হাবিবুর রহমান।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ের সামনে দৈনিক আমাদের বার্তার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
জানা গেছে, ওই ছয় শতাধিক প্রার্থী নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হলেও মাদরাসার বর্তমান এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী যোগ্যতা না থাকায় চূড়ান্ত সুপারিশ পাননি। সনদ যাচাই করে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে।
আর সহকারী মৌলভী পদটি মূলত মাদরাসার ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক পদ। স্কুল ও মাদরাসায় ধর্ম শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতায় অসামঞ্জস্যতা আছে। মাদরাসার বিদ্যমান এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী, সহকারী মৌলভী পদের জন্য সর্বশেষ ডিগ্রি বা ফাজিলে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। তবে সর্বশেষ স্তর ছাড়া অন্যান্য স্তরের যেকোনো একটিতে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু স্কুলের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী একই শিক্ষাগত ডিগ্রি নিয়ে ধর্ম শিক্ষক হতে সমগ্র শিক্ষা জীবনে যেকোনো একটি তৃতীয় শ্রেণি বা বিভাগ গ্রহণযোগ্য। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বহু প্রার্থী ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে সনদ যাচাই করে ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে নির্বাচিত ছয় শতাধিক প্রাথীকে বাদ দিয়ে বাকিদের নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়েছে।
ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে বিভিন্ন মাদরাসায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের নির্বাচিত হয়েও চূড়ান্ত সুপারিশ না পাওয়া বহু প্রার্থী গতকাল রোববার সকাল থেকে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে তাদের নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করার দাবি জানাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে এনটিআরসিএ কার্যালয়ে আসেন মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান।
দুপুরে এনটিআরসিএ কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে কথা বলেন মহাপরিচালক। এসময় ডিজি হাবিবুর রহমানের কাছে ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া প্রার্থীদের চূড়ান্ত নিয়োগ সুপারিশের জটিলতা সমাধান হবে কি-না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তাদের জটিলতা সমাধানের চেষ্টা চলছে। আমরা আলোচনা করছি। দেখা যাক কি হয়।
তিনি আরো জানান, বিদ্যমান এমপিও নীতিমালায় সহকারী মৌলভী ও ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতায় যে অসামঞ্জস্যতা ছিলো তা নিরসন করতে ইতোমধ্যে সংশোধনের প্রস্তাবে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমরা (মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর) ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
এসময় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হয়েও সুপারিশ না পাওয়া কয়েকজন প্রার্থী ডিজি হাবিবুর রহমানকে বিষয়টি সমাধানের অনুরোধ জানান। তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। দুই প্রার্থীকে ডিজির পা ধরার চেষ্টা করতেও দেখা যায়। তবে ডিজি তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
এদিকে এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে নিবন্ধিত হওয়া নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিলো। বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে সভাও করেছিলেন। তবে তারা ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা এনটিআরসিএকে জানাননি। তাই তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি। তবে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ যদি কোনো লিখিত আদেশে ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে নিবন্ধিত হওয়া নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের নির্দেশনা দেয় তবে ওই প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশের ব্যবস্থা করা যাবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।