মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে তালা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে তারা ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
জানা যায়, এর আগে মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে টানা ৮২ দিন অবরুদ্ধ থাকে চবির চারুকলা অনুষদ। তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী দীপুমণি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং সাবেক সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীন নিজে গিয়ে তাদের মূল ক্যাম্পাসে ফেরার আগ পর্যন্ত ইনস্টিটিউট সংস্কার করে পাঠ উপযোগী করার আশ্বাস দেন।
কিন্তু এর সাতদিন পেরিয়ে গেলেও সংস্কার কাজের কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই শিক্ষার্থীরা পুনরায় ক্লাস বর্জন করে ইনস্টিটিউটের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এবার আর তারা সংস্কারের আশ্বাসে ক্লাসে ফিরবেন না। তাদের এক দফা দাবি মূল ক্যাম্পাসে ফেরা। এর আগ পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি তারা চালিয়ে যাবেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আসার এক সপ্তাহেও কর্তৃপক্ষ আমাদের ক্লাসরুম, ডাইনিং, বাথরুম ইত্যাদি সংস্কার করতে পারেনি। সুতরাং, আমরা ফের মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা এক দাবিতে অবরোধে নেমেছি। আমাদের এবারের আন্দোলন আরও জোরদার হবে।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী আলম সজীব বলেন, আমাদের সংস্কারের মূলা ঝুলিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করিয়েছে। কিন্তু সংস্কারের কাজে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই আমরা এক দাবিতে এখন আন্দোলনে নেমেছি। আমাদেরকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরত না নেওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে জানতে চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সুফিয়া বেগমকে একাধিকবার কল করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ ইয়াকুব বলেন, আন্দোলন প্রত্যাহারের পর থেকেই আমাদের প্রকৌশল দপ্তরের লোক সেখানে গেছে। পরদিন মন্ত্রণালয় থেকেও লোক গেছে। তারা বলেছে, এটা সংস্কার করে ক্লাস করা যাবে। স্থানান্তরের বিষয়ে জেলা প্রশাসন কাজ করবে বলেছিল, আমাদের কাজ আমরা ঠিকঠাক করছি।
গতবছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জন শুরু করেন চবির চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি পরিবর্তন করে হঠাৎ মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা এক দাবিতে রূপ নেয় আন্দোলন। টানা ৮২ দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ইনস্টিটিউট অবরুদ্ধ রাখার পর গত ২৩ জানুয়ারি ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষার্থীরা।