রমজান মাসের আরবি উচ্চারণ ‘রামাদান’ নিয়ে ফেসবুকে ‘বিতর্কিত’ পোস্ট দেয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনায় অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করে জারি করা আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন। দৈনিক শিক্ষাডটকমের পাঠানো পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠন দুটি বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
মঙ্গলবার দৈনিক শিক্ষাডটকমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বাকবিশিস অধ্যক্ষের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন সম্মানিত জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তারের (সেলিনা শেলী) একজন প্রতিষ্ঠিত কবি, খ্যাতিমান শিক্ষক, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছিলেন সব সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে বজ্রকণ্ঠ। তার মতো একজন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষককে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি আমাদের ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করে। আমরা তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি পুনর্বিবেচনা করে তাকে স্বপদে বহাল করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।
গতকাল সোমবার দৈনিক শিক্ষাডটকমের পাঠানো এক বিবৃতিতে অধ্যক্ষ সেলিনা আখতার শেলীর বরখাস্তের আদেশ বাতিলের দাবি জানায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।
সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ফেসবুকে মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের জেরে চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশে প্রশাসন এবং কিছু সাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ব্যবহার করে আসছে।
এর আগে গত রোববার চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (প্রশাসন) মমিনুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আপনি ফেসবুকে পবিত্র রমজান মাসের আরবি উচ্চারণ রামাদানকে কটাক্ষ করে পোস্ট দিয়েছেন। ওই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে অসংখ্য মানুষ আপনার পোস্টের মন্তব্যে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া জানায়। আপনার পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভেতরে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে এবং বন্দর এলাকায় এর প্রতিবাদে মিছিল সমাবেশ আয়োজনসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এবং সাম্প্রদায়িক উসকানিসহ সরকারকে অস্থিতিশীল ও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই কার্যক্রম ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ এর ২৮ ও ৩১ ধারা মোতাবেক দণ্ডযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নীতিমালা-২০১৯ এর বিধি ৬.২ ও বিধি ১০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং চবক চাকরি প্রবিধানমালা-১৯৯১ এর ৩৯ (খ) মোতাবেক সুস্পষ্ট অসদাচরণ ও গুরুদণ্ডযোগ্য অপরাধ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মোকাদ্দমা রুজু করা হয়েছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।