ফেসবুক পোস্টের জেরে শিক্ষককে মার*ধরের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

ফেসবুক পোস্টের জেরে শিক্ষককে মার*ধরের অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, খুলনা |

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট দেয়ায় এক শিক্ষককে তুলে নিয়ে মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনার কয়রায় বেদকাশী কাঁচারি বাজার জামায়াত কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম বি এম হুমায়ুন কবির। তিনি বেদকাশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অর্থপাচার নিয়ে একটি পোস্ট দেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের রোষানলে পড়েন তিনি। গত ফেব্রুয়ারিতে চেক প্রতারণা মামলায় কারাগারে যাওয়ায় চাকরি থেকে তিনি বরখাস্ত হয়েছেন।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ নিয়ে একটি বৈঠক হয়। এ সময় ফেসবুকে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দেওয়ার সিদ্ধান্তে ওই শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার ভোরে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন হুমায়ুন কবির। সেখানে তিনি জামায়াত আমিরের সমালোচনা করেন। বিষয়টি নিয়ে জামায়াত নেতা-কর্মীরা মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালে তিন ঘণ্টা পর তিনি সেটি মুছে ফেলেন। গত রোববার দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরেকটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘জামায়াতের আমিরকে নিয়ে পোস্ট ও ভুলবশত দৃষ্টিকটু শব্দ ব্যবহার করায় আন্তরিক দুঃখিত!’

শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, '‘আওয়ামী লীগকে বারবার ফ্যাস্টিট বলা পছন্দ করি না’- জামায়াত আমিরের এই কথাটি আমার ভালো লাগেনি। তাই আমি ফেসবুকে পোস্টটি দিয়েছিলাম। পরে সবাই খারাপ মন্তব্য করলে আমি মুছে ফেলি। তারপরও নানারকম মন্তব্য কানে আসছিল। এ জন্য ক্ষমা চেয়ে আরেকটি পোস্ট দেই। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফোন করে আমাকে জামায়াত অফিসে যেতে বলে। কিন্তু রাজি না হলে আমার বাড়িতে লোক পাঠিয়ে তুলে নিয়ে আসবে বলে জানানো হয়। বাড়িতে আসলে ঝামেলা হতে পারে ভেবে আমি বাজারের দিকে রওনা দেই। পথেই ৮-১০ জন আমাকে গাড়িতে তুলে নেয়। এ সময় তারা আমাকে মারধর করে। ব্যথায় আমি রাতে ঘুমাতে পারিনি।'' 

তিনি আরও বলেন, 'জামায়াত অফিসে উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল্লাহ, বেদকাশি ইউনিয়ন আমির মাস্টার নূর কালামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। রিমান্ডের মতো তারা আমাকে জেরা, নানা কটূক্তি করে হেনস্তা করেন, আমার মোবাইল চেক করে কল রেকর্ড ও ছবি মুছে ফেলেন। ডিসপ্লেও ভেঙে ফেলেন। পরে তারা পুলিশের কাছে তুলে দেন। কিন্তু পুলিশ থানায় না নিয়ে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়।' 

তবে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল্লাহ বলেন, 'তাকে কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি। অফিসে ৫০-৬০ জন লোক ছিল, সবাই একটি টোকা মারলে তো তাকে খুঁজে পাওয়া যেত না।' তিনি বলেন, 'ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় তাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। আমরা বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়েছি। এখন তারা কী ব্যবস্থা নেয় সেই অপেক্ষায় রয়েছি।' 

কয়রা থানার ওসি ইমদাদুল হক জানান, 'ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ঘটনা নিয়ে জামায়াতের লোকজন উত্তেজিত ছিল। তারা শিক্ষককে আটকের কথা বলেছে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া আমরা কাউকে ধরতে পারি না। বিষয়টি ইউএনওকে জানিয়েছি।' 

বিষয়টি নিয়ে আজ দুপুরে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে ইউএনও রুলী বিশ্বাস, থানার ওসি ইমদাদুল হক, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার কর্মকার ও উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠক শেষে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার কর্মকার জানান, 'হুমায়ুন কবীর ফেসবুকে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।'

‘বারাসাত ব্যারিকেড’ ঘোষণা তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ‘বারাসাত ব্যারিকেড’ ঘোষণা তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের রাতারাতি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব না - dainik shiksha রাতারাতি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব না মনোনীত হয়েও বৃত্তি থেকে বঞ্চিত রাবির ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী - dainik shiksha মনোনীত হয়েও বৃত্তি থেকে বঞ্চিত রাবির ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার বেরোবির সাবেক প্রক্টর - dainik shiksha আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার বেরোবির সাবেক প্রক্টর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে মাদরাসা-ই-আলিয়ার ভবনে অস্থায়ী আদালত বন্ধের দাবি - dainik shiksha মাদরাসা-ই-আলিয়ার ভবনে অস্থায়ী আদালত বন্ধের দাবি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি নিয়ে নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি নিয়ে নতুন নির্দেশনা বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052390098571777