দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি : বাংলা একাডেমীর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এলাকা ছাড়তে ইচ্ছুক নয়। সরকারের সিদ্ধান্তে উদ্যানের সংস্কার কাজের জন্য এক-দুই বছর হয়তো অন্য কোথাও বইমেলা আয়োজনের চিন্তা করা যেতে পারে। সেটা অবশ্যই একাডেমী প্রাঙ্গণের বাইরের রাস্তায় আগেকার সময়ের মতো আয়োজন করা যেতে পারে। কিন্তু স্থায়ীভাবে মেলার স্থানান্তরের ব্যাপারে বাংলা একাডেমী আগ্রহী নয়। গতকাল মঙ্গলবার বাংলা একাডেমীর আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বেলা ১১টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা।
তিনি জানান, বইমেলার প্রস্তুতি প্রায় ৯৫ শতাংশ শেষ। ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকেই আমরা মেলা শুরু করতে পারবো। এবার বইমেলার বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে। তবে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মেলার বাহির-পথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির-গেটের কাছাকাছি স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউশন অংশে মোট আটটি প্রবেশ ও বাহির-পথ থাকবে।
এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেলায় ৩৭টি (একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি) প্যাভিলিয়ন থাকবে।
এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায়। সেখানে প্রায় ১৭০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে।
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে লেখক জাকির তালুকদারের দীর্ঘ দশ বছর পর বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, তার কাছে যে অসঙ্গতি মনে হয়েছে তা তিনি উল্লেখ করে অর্থমূল্য সমমানের একটি চেক হস্তান্তর করেছেন। এটি যেহেতু একাডেমীর নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদের বিবেচনার বিষয়, তাই তারাই আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন।
বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়ানো যায় কিনা প্রশ্নের উত্তরে মহাপরিচালক বলেন, বাংলা একাডেমী থেকে প্রায় ১১টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। যেহেতু পুরস্কারের অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়, তাই পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়ানোর ব্যাপারটি সরকারের সাথে আলোচনার একটি বিষয়।
বইমেলায় খাবারের দাম ও মানের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে পরিচালক ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এবার মেলায় খাবারের আয়োজন ক্ষুদ্রপরিসরে। বাইরের কোনো খাবার নিয়ে না ঢোকার নির্দেশনা থাকবে আগের মতোই। অন্যবারের তুলনায় এবারে মেলার স্টলের খাবারের দাম ও মানের ব্যাপারে আমরা বেশি সচেতন। মনিটরিংয়ের চেষ্টা থাকবে আমাদের।