দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : বড় মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ায় জাপানি মা ডা. এরিকো নাকানোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে। সন্তানদের বাবা ইমরান শরীফ এই আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের স্থিতাবস্থা থাকার পরেও দেশত্যাগ করেছেন ডা. এরিকো। যা আদালতের আদেশের লঙ্ঘন।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) আবেদনটি উপস্থাপনের পর চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম বলেন, যেহেতু দেশত্যাগ করেছেন সেহেতু স্থিতাবস্থার আদেশ অকাযর্যকর হয়ে গেছে। আদালত অবমাননার আবেদনটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে প্রেরণ করা হলো।
আগামী ২১ এপ্রিল আদালত অবমাননার এবং স্থিতাবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন এবং হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জাপানি শিশুদের বাবা ও মায়ের করা পৃথক দুটি আবেদন শুনানির জন্য থাকবে।
আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডা. এরিকোর কৌসুলি অ্যাডভোকেট মো. শিশির মনির। তিনি বলেন, গত ৯ এপ্রিল বেলা ১টায় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ হওয়ার পূর্বেই বেলা ১১টার দিকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে তারা দেশত্যাগ করেন।
শিশির মনির বলেন, হাইকোর্টের রায়ের কোথাও বলা নেই বাবা ও মা সন্তানদের নিয়ে দেশত্যাগ করতে পারবেন না। তবে আগামী ২১ এপ্রিল আপিল বিভাগে এই মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এর আগেই বাংলাদেশে ফিরে আসবেন জাপানি মা ও তার সন্তান।
ডা. এরিকোর স্বামী ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা স্বত্বেও বড় সন্তানকে নিয়ে নাকানো এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে।
গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এক রায়ে জাপানি দুই শিশুকে মায়ের হেফাজতে রাখার আদেশ দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ঢাকার জেলা জজ আদালতে আপিল করেন ইমরান শরীফ। সেই আপিল খারিজ হয়ে যায়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করেন তিনি।
সেই মামলার শুনানি শেষে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, জাপানি দুই সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা থাকবেন মা ডা. এরিকো নাকানোর জিম্মায়। আর মেজো মেয়ে লাইলা লিনা থাকবেন বাবা ইমরান শরীফের কাছে। তবে উভয় সন্তানদের সঙ্গে বাবা-মা যেন সাক্ষাৎ করতে পারেন সেই অধিকার তাদের নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত আপিল আংশিক মঞ্জুর করে এই রায় দেন বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে বাবা ও মা দুজনেই পৃথক পৃথক আবেদন করেছেন।