বিনা নোটিশে ১৪ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ডাইনিং। তবে ডাইনিং খোলা নিয়েও চলছে তালবাহানা।
ছুটির উপলক্ষ এলেই বন্ধের হিড়িক পড়ে ডাইনিংগুলোয়। ছুটির আগেই বন্ধ করে দেয়া হয় ডাইনিং। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি শেষ হলেও ছুটির রেশ কাটে না বিপুল শিক্ষার্থীর খাবারের চাহিদা মেটানো হলের এসব ডাইনিংগুলোতে। মূলত খাবারের দাম বাড়াতেই দফায় দফায় খোলা-বন্ধের নাটক করা হয় বলে অভিযোগ আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, নোটিশ ছাড়াই গত ১৯ অক্টোবর রাত থেকে পূজার ছুটি উপলক্ষে সব হলের ডাইনিং বন্ধ করে দেয় হল কর্তৃপক্ষ। ২ নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির শেরেবাংলা হল, শেখ হাসিনা এবং শেখ সায়েরা খাতুন হলের ডাইনিং খুললেও বন্ধ রয়েছে বাকি হলগুলোয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় এক হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিবার দাম বৃদ্ধির সময় বাহানা করে ছুটির পরে দীর্ঘদিন ডাইনিং বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে প্রতি বেলা খাবারের দাম ৩৫ টাকা। এর আগেও ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা মূল্য নির্ধারণের সময় প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ রাখা হয় হলের ডাইনিং। ডাইনিং বন্ধের খবর জানা থাকলেও অজানা কারনে নিশ্চুপ থাকে প্রশাসন। ম্যানেজার ছাত্র সংখ্যা কম দেখিয়ে যখন দীর্ঘ সময় ধরে ডাইনিং বন্ধ রাখে ঠিক একই সময়ে রমরমা ব্যবসা চলে হলের ক্যান্টিনগুলোতে। শিক্ষার্থীদের চাপে ক্যান্টিনগুলোতে খাবার সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ছুটতে হয় ক্যাম্পাসের বাইরে। কেউ বা বাধ্য হন বৈদ্যুতিক হিটারে রান্না করতে। আবার অনেকে বাধ্য হন অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে।
পূজার পর থেকে ডাইনিং বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে নিজ কক্ষেই রান্না করে খাচ্ছেন কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদ। তিনি বলেন, রান্না করতে গিয়ে ক্লাস ও পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে। অনেক সময় রান্না করতে না পারলে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে খেতে হয়। এতে যাওয়া-আসায় অনেক সময় চলে যায়। খরচও বেশি পড়ে।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাওন বলেন, একে তো মানহীন খাবার শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খাওয়ানো হচ্ছে, তার ওপর কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ ডাইনিং বন্ধ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে ডাইনিং চালু করা এবং খাবারের মান উন্নত করার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় প্রতি বেলায় শিক্ষার্থীদের ৩৫ টাকায় খাবার সরবরাহ করতে পারছে না ডাইনিং ম্যানেজাররা। মূল্য নির্ধারণের জন্য রোববার প্রভোস্ট কাউন্সিলের সব সদস্য, প্রত্যেক হলের খাদ্য মনিটরিং কমিটির শিক্ষার্থী এবং ডাইনিং ম্যানেজারদের নিয়ে মিটিং করা হবে।