বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল ও একজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ রুমি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৬তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত ও সুপারিশের আলোকে সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ছাত্রত্ব বাতিল হওয়া দুই শিক্ষার্থী হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র শিহাব উদ্দিন পাটোয়ারী ওরফে রিফাত এবং তানজিদুল হক ওরফে মঞ্জুর। একই বিভাগের ২০২০- ২১ শিক্ষাবর্ষের আহাদ খান রাফিকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা যায়, গতবছরের অক্টোবর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়টির বঙ্গবন্ধু হলের কক্ষে আটকে আবাসিক ছাত্র মুকুল আহমেদকে রাতভর নির্যাতন করে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেয়া হয়। হলের ৪০১৮ নম্বর কক্ষে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকালে সহপাঠীরা আহত মুকুলকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছিল।
এ ঘটনায় সেসময় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে বহিষ্কৃত ৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। কমিটির সদস্যরা দোষীদের শাস্তির সুপারিশ করেছিলেন বলে জানা যায়।
কিন্তু রহস্যজনক কারণে প্রতিবেদন হাতে পাবার পরও দোষীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি তৎকালীন উপাচার্য ড. ছাদেকুল আরেফিন।
ভুক্তভোগী মুকুল নরসিংদী সদরের বাসিন্দা। তার বাবা কাঠমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করে সংসার চালান। মুকুল টিউশনি করে নিজের ও বোনের পড়াশোনার খরচ জোগাতেন। হামলার ঘটনার পর অভিযুক্তরা মুকুলকে শিবিরকর্মী ও ঘটনাকে কাল্পনিক আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করে।
এতদিন পর দোষীদের শাস্তির সংবাদ পেয়ে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি যখন আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছিলাম তখন অভিযুক্তরা আমার বিরুদ্ধেই ক্যাম্পাসে মিছিল করেছিলো। বিচারের আশায় কত জায়গায় যে গিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। প্রায় এক বছর পর হলেও ঘটনাটির বিচার হলো সেজন্য আমি খুশি। আমার মতো আর কাউকে যেন এমন পরিস্থিতির শিকার হতে না হয় সেই আশাই করছি।