বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) বিভিন্ন পরীক্ষা কমিটি কমিটিতে রাখায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। আহসান কলিমউল্লাহ নিয়মিত স্বৈরশাসক আওয়ামী প্রশাসনের তৈলমর্দন করতেন। যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে সর্বাত্মক বয়কট করেছেন। তাই কোনোভাবেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার উপস্থিতি মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল রোববার (১৭ নভেম্বর) বিতর্কিত ব্যক্তিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কমিটি ও কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি ও ক্যাম্পাসে অবস্থানের অনুমতি না দেয়ার জন্য তারা প্রক্টর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
এর আগে বিতর্কিত অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) পরীক্ষা কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ও শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পূর্বতন চাকরিকাল গণনা কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। এর পরপরই শুরু হয় নানা প্রতিক্রিয়া।
এদিকে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি ঢাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে, যা আমাদের জন্য পীড়াদায়ক। বিগত আওয়ামী আমলে সবগুলো পাতানো নির্বাচনের বৈধতা দিতে তার নিয়ন্ত্রণাধীন জানিপপ সামনের সারিতে থেকে স্বৈরশাসকদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতে ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ নিয়মিত স্বৈরশাসক আওয়ামী প্রশাসনের তৈলমর্দন করতেন। এর প্রতিদানে তিনি বেরোবির ভিসি হন।
যেখানে তিনি সব রকম দুর্নীতিকে ছাপিয়ে বেরোবিকে অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করেন। তৎকালীন বেরোবি প্রশাসন এই বিষয়ে ৭৯০ পৃষ্ঠার দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করেন। স্বৈরাচার সরকারের দীর্ঘদিনের চলমান দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, বিদেশে অর্থ পাচার, মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ এবং সর্বোপরি মানুষের নিত্যপণ্যের লাগামহীন উধ্র্বগতি জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে।
তার ফলস্বরূপ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান- ২০২৪ এর ছাত্র আন্দোলনের বিজয় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়। জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা বিতর্কিত সরকারের পতনের পর শত-শত ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের ধারায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন আমাদের বর্তমান ভিসি শুচিতা শরমিন।
কিন্তু বিতর্কিত ও আওয়ামী সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল, পরীক্ষা কমিটি ও পূর্বের চাকরি গণনা কমিটিতে স্থান পাওয়ায় শহীদ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মহিমাকে কলুষিত করছে।
এমন পরিস্থিতিতে, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে ক্যাম্পাসে অবস্থানের অনুমতি দেয়ার ফলে ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়াই করতে আমরা বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে সর্বাত্মকভাবে বয়কট করায় কোনোভাবেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার উপস্থিতি মেনে নেবে না।