নিজ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকা নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিরা। জীবিকার তাগিদে সত্তর দশক থেকে দেশটিতে পাড়ি জমাতে শুরু করেন প্রবাসীরা। সময়ের ব্যবধানে নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে প্রবাসে তৈরি করেছেন ভালো অবস্থান। তবে দীর্ঘদিন পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য আমিরাতের তিন প্রদেশে বাংলা মাধ্যমের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই।
বর্তমানে আমিরাতে প্রায় ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন। তেলশিল্পের কারণে দেশটির অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী ও জীবনযাত্রার মানের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি। জীবন-জীবিকার মান উন্নত হওয়ায় বহু বাংলাদেশি পরিবার নিয়ে দেশটিতে বসবাস করেন। আবার নতুন করেও অনেকে সেখানে যাচ্ছেন। আর্থিক সচ্ছলতা ফেরালেও সন্তানদের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চায় পিছিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শিগগিরই সেখানে বাংলা মিডিয়াম স্কুল চান অভিভাবকরা।
বাংলাদেশি নারী উদ্যোক্তা শেফালী আকতার আঁখি বলেন, দেশটিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকাংশই থাকেন দুবাই, শারজাহ ও আজমানে। তবে এই অঞ্চলগুলোতে বাংলা মাধ্যমের কোনো স্কুল না থাকায় বাধ্য হয়ে সন্তানদের পড়াতে হয় ভিনদেশি স্কুলে। তাতে করে নতুন প্রজন্ম নিজ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আল জার্ফ মেডিকেলের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ সুলতান আহমেদ বুলু বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আমিরাতে বিভিন্ন সেক্টরে নিজ চেষ্টায় স্বাবলম্বী হয়েছি।
দীর্ঘদিন পরিবার নিয়ে দেশটিতে বসবাস করছি। কিন্তু বাংলাদেশি স্কুল না থাকায় সন্তানদের পড়াতে হচ্ছে ভারতীয়, পাকিস্তানি বা ব্রিটিশ কারিকুলামে। মেটেওরা ডেভেলপারস নেসার রেজা খান বলেন, ‘আবুধাবি ও রাস আল খাইমাহ শহরে বাংলাদেশি স্কুল থাকলেও যাতায়াতের দূরত্বের কারণে দুবাই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বাংলা চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ দুবাই ও উত্তর আমিরাতে বাংলাদেশি স্কুল না থাকায় ক্ষোভও প্রকাশ করেন এই প্রবাসী। অবিলম্বে বাংলাভাষার স্কুল চালু করতে বাংলাদেশ দূতাবাসসহ সংশ্লিষ্ট মহলকে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।