দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আবাসন সংকটে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের হলগুলোতে এই সংকট চরমে। এতে পড়াশোনোর স্বাভাবিক পরিবেশ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম জানান, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃর্ত ছাত্রীদের সংখ্যা শতকরা যথাক্রমে ৪৫ দশমিক ৭১, ৪৫ দশমিক ৩৫, ৫৪ দশমিক ৪৭, ৪৭ দশমিক ১৮ এবং ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছর মেয়াদি ‘অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় ছাত্রীদের জন্য দুইটি ১০তলা ভবন বিশিষ্ট নতুন হল তৈরির কাজ শুরু হয়। ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ভবন দুটির প্রত্যকটির ধারণ ক্ষমতা হবে ১২০০টি আসন। কিন্তু কাজ শুরুর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও নতুন হলগুলোর দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বর্ধিত ছাত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের হলগুলোর ডাইনিং, নামাজ ঘর ও কমন রুমগুলোকে গণরুম বানিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য আসন করে দিয়েছেন হল প্রশাসন। তারপরেও ছাত্রীদের সিটের সংকট নিরসনে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীরা দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন। গত শনিবারও সিট বহালের দাবিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বেগম রোকেয়া হলের সামনের প্রধান সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ওই হলের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, মাস্টার্সের থিসিসের হার্ডকপি জমা দেয়ার আগেই হলের সিট বাতিল করেছেন হল প্রভোস্ট। সিটের সমস্যা সমাধানের দাবিতে গত সোমবার রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেন সুলতানা রাজিয়া হলের প্রথম বর্ষের ছাত্রীরা।
এর আগে, গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি হলে সিটের দাবিতে প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে নতুন ছাত্রী হলের (হেলথ কেয়ারে অবস্থিত) ছাত্রীরা।
হলের আবাসন সংকটের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. নূরুল হায়দার রাসেল বলেন, মেয়েদের সংখ্যানুযায়ী পর্যাপ্ত হল না থাকায় এই আবাসন সংকট থেকেই যাচ্ছে। সংকট নিরসনে সুলতানা রাজিয়া হলে নতুন উইং তৈরি এবং রোজী জামাল হল সংস্কারের কাজ চলছে। চলমান কাজগুলো শেষ হলেই নতুন শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত আসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, প্রতি বছরই ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আসনের সংকুলান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সিটের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। নতুন করে দুটি ছাত্রী হলের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। হল দুইটির কাজ শেষ হলে সিটের সংকট নিরসন হবে।