রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহামুদুল হককে বাদীর সম্মতি ছাড়াই আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।
ওই শিক্ষককের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে জানা যায়, তিনি কোটা আন্দোলনের পক্ষে সরব ছিলেন প্রথম থেকেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পোস্টও দিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের জন্য যেমন বিশ্লেষণ হাজির করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন সাঈদসহ অনাকঙ্ক্ষিত সব মৃত্যুর। প্রতিবাদী এই শিক্ষককে গত ১৮ জুলাই রংপুরে মডার্ন মোড়ে অটোচালক মানিক মিয়া হত্যাকাণ্ড মামলায় ১৯ নম্বর ‘আসামি’ করায় সব মহল হতভম্ভ।
জানা যায়, রংপুর শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন মানিক মিয়া। গত ২০ জুলাই পুলিশ বাদী হয়ে মামলাও করে তাজহাট থানায়। তখন মাহামুদুল হকের নাম ছিলো না। মামলার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তাজহাট থানার ওসি বলেন, ৩১ তারিখে আদালতের আদেশ আসলে নতুন মামলার কাজ শুরু হবে।
মাহামুদুল হক বলেন, মামলাটি করেছেন নিহতের মা, যিনি আমাকে চেনেন না। আর আমি আদালতে মামলা হওয়ার পর মামলার বিবরণ পাঠ করে জানলাম অটোচালক নিহত হয়েছেন আর আমি নাকি এর জন্য গিয়েছি কোটা বিরোধীদের সঙ্গে। রংপুর শহরের মর্ডানে যে স্থানে পুলিশ গুলি করেছে সে স্থানটি এখনো আমি চিনি না।
মামলা অনুযায়ী ১৮ জুলাই ২টা-সাড়ে ৩টার মধ্যে মানিককে গুলি করা হয়। মাহামুদুল হক জানান, এই পুলিশের গুলির সঙ্গে কীভাবে আমি জড়িত তা আমার মাথায় আসে না। মাহামুদুল হক আরো জানান, তিনি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন, আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করা রাইটস ডিফেন্ডার। পুলিশকে গুলি করানোর মতো তার এখতিয়ার যেমন নেই তেমনি এ ঘৃণ্যকাজ করা সম্ভবও নয় বলেও তিনি জানান।
মামলার বাদী নিহত মানিক মিয়ার মা মোছা. নুরজাহান বেগম বলেন, ‘বাড়িতে আমার ছেলের বউ ছিলো না। ছেলে ছিলো না। বেটি-জামাই কেউ ছিলো না। আমি মামলা করছি আমি বুঝবার পারিনি। মামলা কীভাবে সাজাইছে তাও আমি জানিনে। আমি তো নামও লিখতে পারি না বাবা। তাও কলম আমার হাতে দিয়া নাম লেখায়। আমি বলছি সই দেবো না, উকিল বলে, লেখো তো।’
মাহামুদুল হককে চিনেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, না, আমি চিনি না। আমি খুবই দুঃখিত বাজান। নিহত মানিক মিয়ার ছোট ভাই রতন মিয়া বলেন, আমরা এসব নিরাপরাধ ব্যক্তিদের আসামি করতে চাইনি।
কীভাবে মাহামুদুল হকের নাম মামলায় আসলো এ প্রসঙ্গে মামলার আইনজীবী আলাউদ্দিন বলেন, আমি তো এইটা বলতে পারবো না। এইটা বাদী বলতে পারবে। মামলা স্থগিত আছে। মামলার আইনগত ঝামেলা আছে।