যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিতে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানের মধ্যেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কাছে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত। বিভিন্ন সময়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘নির্বাচনপরিপন্থি’ বক্তব্য যুক্ত করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি প্রকাশ করেন। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূতের বাসায় মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের এক দিন পর তিনি এ চিঠিটি প্রেরণের কথা প্রকাশ করলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে দেওয়া চিঠিতে আরাফাত বলেন, ‘আপনাদের সম্প্রতি ঘোষিত ভিসা নীতি অনুসারে (এবং আপনি যে চিঠিটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন) যেখানে আপনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, এই নীতি বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবৃত প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে এবং যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশি নাগরিক বা যে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তারা যখন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে, তখন তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে আমি কিছু ভিডিও ফুটেজ সংযুক্ত করেছি, যেখানে আপনি দেখতে পাবেন যে, বিএনপির কিছু শীর্ষ নেতা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন। আমি আশা করি, আপনার ভিসা নীতি বিএনপির এ নেতাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।’
ভিডিওতে দেখা গেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ আরও একটি নতুন নির্বাচন আয়োজনের পাঁয়তারা শুরু করেছে। এ নির্বাচনকে আমাদের অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, খালেদা জিয়াকে ছাড়া আগামী নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।
সংযুক্ত ভিডিওতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনার সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সহায়তার জন্য নতুন এ ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে।
নীতি অনুযায়ী, বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করলে বা তাতে সহায়তা করলে যে কোনো ব্যক্তিকে আর ভিসা না-ও দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। যাদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের কর্মরত কিংবা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, সরকারি বা বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরাও রয়েছেন