এবার এক বিএনপি নেতার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক সিনিয়র শিক্ষক। ভর্তির তথ্য নিতে এসে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। মাসুদ রানা কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা এ দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলা জুড়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।
এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষক বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং কিছু অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা অন্যরা হলেন, পৌর এলাকার পুরাতন পশু হাসপাতাল মোড়ের শামসুল হকের ছেলে রুপন মিয়া, পুরাতন রেল স্টেশনের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আমিনুর রহমান,কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ মিয়া।
নির্যাতিত শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, পিয়নের মুখে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হট্টগোলের খবর পেয়ে সেখানে যাই। কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানের ভর্তি বাতিল বিষয়ে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে মো. মাসুদ রানা প্রথমে আমার উপর চড়াও হয়। এরপর ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে যান। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছি।
অভিযুক্ত মাসুদ রানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমার সন্তানকে ১৮ ডিসেম্বর স্কুলে ভর্তি করাই। ২৮ ডিসেম্বর স্কুলের নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারি আমার সন্তানসহ ৪২জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। সে ব্যাপারে কয়েকজন অভিভাবকসহ প্রধান শিক্ষককে দরখাস্ত দিয়ে কপি গ্রহণ করি। কথা বলার এক পর্যায়ে একজন শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে পরলে তার সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। আমি তাকে লাঞ্ছিত করিনি।
কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, স্কুলে ভর্তির বিষয়ে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের নামে একাধিক আবেদন করায় মন্ত্রণালয় থেকে ৪২জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে দেয়া হয়। এ নিয়ে কিছু অভিভাবক কথা বলতে গিয়ে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এরই প্রতিবাদ করায় সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আব্দুল হাই সিদ্দিকীর ওপর চড়াও হন অভিভাবক মাসুদ রানা। তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলতে বলতে তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে যান। এ ব্যাপারে মাসুদ রানাসহ, অভিভাবক মো. রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও মো. বিদ্যুতের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের নামে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মো: শাহরিয়ার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।