ময়মনসিংহের ভালুকায় স্কুলের মাঠ দখল করে ধানচাষ করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের ৭১ নম্বর কাদিগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত সালেহ ইমরান ওই এলাকার বাসিন্দা এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই হিসেবে ঢাকার উত্তরায় কর্মরত। বিদ্যালয়ের বেহাত হওয়া প্রায় ৫৭ শতাংশ জমি এ পুলিশ কর্মকর্তা ভোগদখল করছেন বলে অভিযোগ।
জানা যায়, ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী নূপুর আক্তার কাদিগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে গত ৯ জুলাই অনুমতি ছাড়া স্কুলভবন ভাঙা ও মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ এনে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও দাতা আবুল কালাম আজাদ তালুকদার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোমাইয়া আক্তার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমেদের নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিনে তদন্তে আসে। এ সময় কয়েকজন জমিদাতাকে দাতা হিসেবে না রাখার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই দুই কর্মকর্তা ভূমির মূল কাগজপত্র যাচাই ছাড়াই স্কুলের নামে আংশিক এবং পাশে অবস্থিত মসজিদ ও মাদরাসার জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেয়। তখন স্কুলমাঠের অংশ মসজিদ-মাদরাসার সীমানায় পড়ে যায়। পরে মাদরাসা ও মসজিদ দেখভালের নাম করে স্কুলমাঠের ওই জমিতে ধানের চারা রোপণ করেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা।
এতে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া সরকারি কালভার্টের মুখ বন্ধ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি করায় ফের ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২৩ জুলাই ইউএনওর কাছে অভিযোগ করা হয়। পরে গত ৩১ জুলাই দুপুরে ইউএনও এরশাদুল আহাম্মেদ সরেজমিনে পরিদর্শন করে ভূমির মূল কাগজপত্র যাচাই করার জন্য একটি কমিটি করে দেন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান লিটনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের জমিদাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তালুকদার বলেন, সরকারি স্কুলের সম্পত্তি উদ্ধার করতে গিয়ে আমি ও কমিটির অন্য সদস্যরা মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। বিদ্যালয়ের বেহাত হওয়া প্রায় ৫৭ শতাংশ জমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা সালেহ ইমরানের ভোগদখলে রয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সালেহ ইমরান বলেন, ‘জমি জবরদখলের অভিযোগ সঠিক নয়। স্কুলমাঠের সামান্য একটুতে রোপণ করা হয়েছে। মাঠ সমান করে দেওয়া হবে। আপনারা স্কুলের কাগজপত্র দেখেন। কাগজপত্র ছাড়া জমি দাবি করলে তো হবে না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহাম্মেদ বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরসনের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি।’