বিদ্যালয়ে ভবন-শিক্ষক আছে, নেই শিক্ষার্থী - দৈনিকশিক্ষা

বিদ্যালয়ে ভবন-শিক্ষক আছে, নেই শিক্ষার্থী

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

গাজীপুরের কালীগঞ্জের বক্তারপুরের পৈলানপুর জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয়ের ভবন, শিক্ষক ও কর্মচারী থাকলেও শিক্ষার্থী নেই একজনও। গতকাল সোমবার দুপুরে এমনটিই দেখা গেছে বিদ্যালয়টিতে খাতা-কলমে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৬০ জন শিক্ষার্থী দেখালেও বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কোনো শ্রেণিকক্ষে একজন শিক্ষার্থীকেও পাওয়া যায়নি। অফিসকক্ষে প্রধান শিক্ষকসহ তিনজন ছিলেন। তাঁরা গল্প করে সময় কাটাচ্ছিলেন।

বিদ্যালয় ও শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত হয়। ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। প্রতিষ্ঠার পরের দুই বছর হাতে গোনা কিছু শিক্ষার্থী পেলেও এরপর থেকে বিদ্যালয়টি হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীশূন্য। 

বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষক, একজন অফিস সহকারী, একজন দপ্তরি, একজন আয়া ও একজন নৈশপ্রহরী রয়েছেন। 

অষ্টম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাশের বিভিন্ন স্কুল থেকে শিক্ষার্থী ধার করে নিজ বিদ্যালয়ের নামে পরীক্ষা দেওয়ায় বলে অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থী না থাকায় স্কুলের অস্তিত্ব রক্ষায় এই পথ অবলম্বনের কথা স্বীকারও করেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহিদা বেগম। 

শিক্ষার্থী উপস্থিতি না থাকা নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘শুরু থেকে আমি এখানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। প্রথমে ১০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী পেলেও অদূরে কিছু বেসরকারি বিদ্যালয় গড়ে ওঠায় আমাদের বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়ে। আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতা কোনোভাবেই পাইনি।’ 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর-ই-জান্নাত বলেন, ‘বিদ্যালয়টির এ করুণ দশার কথা আমি জানি। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টি পর্যবেক্ষণে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু বোর্ডে তিনটি পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে রিপোর্ট দিতে হয়, তাই আরও দুটি পর্যবেক্ষণ করে বোর্ডে রিপোর্ট করব।’

এদিকে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের বাসুলী তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গতকাল দুপুরে দেখা গেছে, দুই শ্রেণিকক্ষ শিক্ষার্থীশূন্য। তবুও ছয়জন শিক্ষক নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। আর স্কুল মাঠ যেন গোচারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। 

স্কুলের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় এমন অবস্থা বলে অভিযোগ করেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা। 

মূল গেট দিয়ে ঢুকতেই স্কুলটিতে দেখা যায় সুনসান। ভেতরে গেলে চতুর্থ শ্রেণিকক্ষে দেখা যায়, শুধু চার শিক্ষার্থী উপস্থিত। তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণিকক্ষে কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল না। সাংবাদিকের উপস্থিতি বুঝতে পেরে স্কুলের শিক্ষকেরা তাড়াহুড়ো করে শিক্ষার্থী হাজিরা খাতায় উপস্থিতি লিখে দেন। এতে সোমবার জায়গায় ভুল করে মঙ্গলবারের দ্বিতীয় শ্রেণির হাজিরা খাতায় শতভাগ উপস্থিতি লিখে দেওয়া হয়। 

জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রাক ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস এবং ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তৃতীয়-পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হয়। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানে চলতি বছরে প্রাক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত খাতা-কলমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯০ এবং শিক্ষক আছেন ৬ জন। 

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা ওই দিন স্কুলে আসেনি। প্রায় দিনই স্কুলে উপস্থিতি এমন থাকে। 

বিদ্যালয়ের পাশে বাড়ি হওয়ায় প্রধান শিক্ষক প্রায়ই স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। তিনিও বলতে পারেন না, বিদ্যালয়ে কতজন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। এ বিষয়ে বাসুলী তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, কিন্ডারগার্টেনসহ নানা কারণে উপস্থিতি কম। 

সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক মিয়া বলেন, ‘এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। এখনো এই স্কুল পরিদর্শন করতে পারিনি। তাই এ বিষয়ে এখন কোনো বক্তব্য দিতে পারছি না।’ 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এরশাদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037078857421875