গোপালগঞ্জে সরকারি বিনামূল্যে বই বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার ৯২নং টুপুরীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণে শিক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা। গত ৫ বছর ধরে ওই স্কুলের বই বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। এই নিয়ে এলাকায় তোলাপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
![](https://dainikshiksha.com/public/uploads/2023/01/%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A7%9F%E0%A6%BE%20%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F.jpg)
কোটালীপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ে প্রাক্ প্রথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পর্যন্ত ২৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য সব বই সরবরাহ করা হয়েছে। গতকাল রোববার বই বিতরণ উৎসবে শিক্ষার্থীদের মাঝে এ সব বই বিতরণ করা হয়েছে। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা করে আদায়ের পর বই বিতরণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষার্থী বই বিতরণে টাকা নেয়ার কথা জানিয়ে বলে, বই দিয়ে আমাদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। টাকা না দিলে বই দেওয়া হবে না- বলে আমাদের প্রধান শিক্ষক নিউটন মল্লিক জানিয়ে দেন। তাই বাধ্য হয়ে ১০০ টাকা করে দিয়ে আমরা বই নিয়েছি।
একাধিক অভিভাবক বলেন, গত ৫ বছর ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষ বই বিতরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। টাকা না দিলে তারা বই দেয় না। এই কারণে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ১০০ টাকা করে দিয়ে বই নিয়ে আসছে। এই বছরও তার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিউটন মল্লিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, টাকা না দিলে বই দেওয়া হবে না, এটা সত্য নয়। টাকা না দিতে পারা অনেক শিক্ষার্থীকে আমরা বই দিয়েছি। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য বই বিতরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা ১০০ টাকা করে নিয়েছি। এটি আমরা প্রতি বছরই নিয়ে থাকি।
ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবি টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য টাকা নেয়া হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীই বার্ষিক প্রতিযোগিতার সময় টাকা দেয় না। এ জন্য আমরা এই বই বিতরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করি। বিগত ৫ বছর ধরে আমরা এভাবে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার টাকা আদায় করছি।
এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, বই বিতরণ নীতিমালায় এটি বিনামূল্যে বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বই বিতরণের নামে এভাবে টাকা আদায়ের কোনো বিধান নেই। যদি এভাবে টাকা নেয়া হয়ে থাকে, তাহলে সরেজমিনে তদন্ত করা হবে। টাকা আদায়ের বিষয়টি প্রমাণিত হলে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।