ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের অঞ্চলে নৈতিকতা আইনের প্রচারণার অংশ হিসেবে এবার ইয়েমেনের সানা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কিত আইন চালু করেছে গোষ্ঠীটি। গণযোগাযোগ বিভাগে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের আলাদা আলাদা দিনে ক্যাম্পাসে উপস্থিতির নিয়ম চালু করে বিদ্রোহীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হুথি-সমর্থিত ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিদ্ধান্ত অনুসারে পুরুষ শিক্ষার্থীরা এখন থেকে শনিবার, রোববার এবং সোমবার ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকতে পারবেন। অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার, বুধবার এবং বৃহস্পতিবার উপস্থিত থাকতে পারবেন। এই নিয়ম বাধ্যতামূলক এবং অবশ্যই পালনীয়। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি। খবর আরব নিউজের।
হুথি নেতারা এবং তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো দাবি করছে, এই পদ্ধতিতে যে পরিবর্তন আসবে তাতে ধর্ষণ এড়ানো যাবে এবং ইসলামিক আদর্শ ও নৈতিকতা সমুন্নত রাখা যাবে। ইসলামে নারী ও পুরুষ মেলামেশা নিষিদ্ধ করেছে।
এক টুইট বার্তায়, হুথি নেতা মোহাম্মদ আলি আল-হুথি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যা করেছে তা নারী শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা ও ইচ্ছা অনুসারে করা হয়েছে। কারণ তারা বিনয়, শালীন এবং উন্নত ইসলামিক মূল্যবোধের ধারক হতে চান।
হুথি-পরিচালিত আল-থাওরা পত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে এক লেখক জানিয়েছেন, পশ্চিমা গবেষণাগুলোতেও বিশ্ববিদ্যালয়ে মেলামেশার ক্ষতিকর প্রভাবগুলো ওঠে এসেছে। এমন অবাধ মেলামেশা বড় হবার আকাঙ্ক্ষাকে মেরে ফেলে, সৃজনশীলতাকে কবর দেয় এবং ছাত্রদের বুদ্ধিমত্তাকে ধ্বংস করে দেয়।
সর্ব স্তরের জনসাধারণ ও সানা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমন পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করেছেন। লিঙ্গ পৃথকীকরণের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইব্রাহিম আল-কেবসি বলেন, হুথিদের এমন অবাস্তব আইন দেশের নারীদের ভিক্ষাবৃত্তিতে পাঠিয়ে দিচ্ছে, চুলায় গ্যাস পাওয়ার জন্য অনেকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন। আমি ইয়েমেনি জনগণকে, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং ইনস্টিটিউটের সব শিক্ষার্থী এবং ইয়েমেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষকদের একযোগে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানাচ্ছি। এই হুথি নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইয়েমেনি জনগণের কাছে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করার আহ্বান জানাচ্ছি।