রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংবাদের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারিত করেছে বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশীকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর এ চক্রের মূল হোতা। তার সঙ্গে আছেন আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপাচার্য দপ্তরের প্রভাবশালী তিন কর্মকর্তা।শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির যে চিত্র প্রকাশিত হলো তা আক্ষরিক অর্থেই নিন্দনীয়। আমরা আশা করব, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে দেখা হবে। এক্ষেত্রে কারও দোষ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমন অনিয়ম যে শুধু বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েই হচ্ছে তা নয়, দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। নজিরবিহীনভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছেন উপাচার্যরাও। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে অধিকাংশ সময়েই অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। অভিযোগ আছে স্বজনপ্রীতির। তারপরও তিনি স্বপদে বহাল আছেন। সম্প্রতি দেশের আট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া আরও ১৩ উপাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়েছে। মোট ২১ উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের বেশিরভাগই স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ, ভবন নির্মাণ ও কেনাকাটায় আর্থিক দুর্নীতিসংক্রান্ত। এটা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।
যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর, সেহেতু সেখানকার অনিয়ম-দুর্নীতি শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনেও প্রভাব ফেলতে পারে। এসব অনিয়ম বন্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়া উচিত। অনিয়ম-দুর্নীতি করে পার পাওয়া যাবে না এটি নিশ্চিত করা দরকার সবার আগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগসহ উত্থাপিত অভিযোগগুলোর ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। দোষী ব্যক্তিরা যেন রাজনৈতিক পরিচয়ে কিংবা অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে কোনভাবেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে না থাকতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।