দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী কোনো ধরনের হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হলে অভিযোগ দ্রুত আমলে নেয়া এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান কোনো স্থানে স্বচ্ছ অভিযোগ বাক্স স্থাপন এবং অভিযোগ পড়ছে কি-না তা নিয়মিত তদারকি করতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন। একইসঙ্গে অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা কর্মপরিকল্পনার বার্ষিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা সংক্রান্ত একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিশনের উপপরিচালক ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির ফোকাল পয়েন্ট বিষ্ণু মল্লিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে এটি দ্রুততার সঙ্গে আমলে নিতে হবে। অভিযোগকারীর গোপনীয়তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এর বিষয়বস্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নস্থানে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিয়ে অভিযোগ করলে তার প্রতিকার পেতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়। অনেকক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না দেখে অনেকেই অভিযোগ করতে উৎসাহিত হন না। বিশ্ববিদ্যালয় সবার জন্য একটি উন্মুক্ত পরিবেশ, তাই এখানে সব কিছু স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। নারীর প্রতি কোনো বৈষম্য, নিপীড়ন ও হয়রানি করা যাবে না বলে অভিমত প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক আবু তাহের বলেন, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিচালনা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ড. ফেরদৌস জামান বলেন, উচ্চশিক্ষাস্তরে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও চাকরিক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে রয়েছে। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে সমাজে লিঙ্গ বৈষম্য কমানো এবং পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিহার করতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যথার্থ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্তপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে।
ইউজিসির উপ-পরিচালক ও অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার ফোকাল পয়েন্ট মৌলি আজাদের উপস্থাপনায় কর্মশালায় ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার ফোকাল ও বিকল্প ফোকাল পয়েন্টরা অংশগ্রহণ করেন।