রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে বিশ্ব। এর মধ্যেই বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার বেড়েছে। বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশ এখন বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি এ তালিকায় বিশ্বের ৫০টি বৃহৎ অর্থনীতির দেশের তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভারত ও বাংলাদেশ রয়েছে। ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার জিডিপি নিয়ে সদ্য গত ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ৩৫তম। আগের বছরে ছিল ৪১ অবস্থানে।
প্রতিবেদেন বলা হয়, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বে দুটি বড় ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়েছে। দ্বিতীয়ত বিশ্ব অর্থনীতির আকার ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে ১০১ দশমিক ৫৬ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে ছোট-বড় সব দেশের জিডিপির হিসাব যুক্ত হয়েছে। তবে এর বড় অংশজুড়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, জার্মানি ও ভারত। ভারত যুক্তরাজ্যকে টপকে পঞ্চম স্থান দখল করে নিয়েছে গত বছর। আরও পাঁচটি দেশকে যদি যুক্ত করা যায়, তবে ১০ দেশের মিলিত জিডিপি বৈশ্বিক জিডিপির ৬৬ শতাংশ। আর ২৫টি দেশ বৈশ্বিক জিডিপির ৮৪ ভাগের অংশীদার।
আইএমএফের পরিসংখ্যানের বরাতে কানাডার অনলাইন প্রকাশনা সংস্থা ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট গত ২৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) নিরিখে এ তালিকা করা হয়েছে।
‘দি টপ হেভি গ্লোবাল ইকোনমি’ শীর্ষক ২৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ ভারত বিশ্ব অর্থনীতিতে পঞ্চম স্থানে চলে এসেছে। জুলাইয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ৩ দশমিক ৪৬ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপি নিয়ে যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে পঞ্চম হয়েছে ভারত।
তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও জার্মানি। দেশ চারটির জিডিপি যথাক্রমে ২৫ দশমিক শূন্য ৩, ১৮ দশমিক ৩২, ৪ দশমিক ৩০ ও ৪ দশমিক শূন্য ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের ১০টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের বাকি পাঁচটি দেশ হচ্ছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, রাশিয়া ও ইতালি। এদের জিডিপি যথাক্রমে ৩ দশমিক ২০, ২ দশমিক ৭৮, ২ দশমিক ২০, ২ দশমিক ১৩ ও ১ দশমিক ৯৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিশ্বের বাকি ১৬৭টি দেশের জিডিপির পরিমাণ খুবই কম, মাত্র ১৬ শতাংশ। নিম্ন জিডিপির দেশগুলোর বেশিরভাগই ওশেনিয়া অঞ্চলের দ্বীপ দেশ। ১৯১টি দেশ নিয়ে তৈরি আইএমএফের এ তালিকায় সর্বশেষ নামটি হচ্ছে টুভালু। ৬৬ মিলিয়ন ডলার জিডিপি নিয়ে দেশটি ১৯১তম অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ৩৫তম। বাংলাদেশের জিডিপির আকার ৪৬০ বিলিয়ন ডলার বা ৪৬ হাজার কোটি ডলার। বাংলাদেশের ঠিক আগেই রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও অস্ট্রিয়া। ঠিক পরেই রয়েছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম।
অর্থনীতির এক ঘোর অনিশ্চয়তা নিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৩ সাল। করোনা মহামারী, এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মূল্যস্ফীতিতে নাকাল বিভিন্ন দেশের মানুষ। অনেক বিশেষজ্ঞ স্বল্প আকারে মন্দা সৃষ্টি হওয়ার কথা বলছেন। তবে এটা স্বল্প না দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। আইএমএফ বলেছে, বিশ্বের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ দেশ মন্দার কবলে পড়বে।