আজ ২১ মার্চ, বিশ্ব বন দিবস। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় বন বা বনভূমির তুলনা চলে না। তাই প্রতিবছরের আজকের দিনটিতে বিশ্বজুড়ে গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয় বন দিবস।
দেশে আশঙ্কাজনক হারে কমছে বনভূমি। গবেষেণা বলছে, অপরিকল্পিত উন্নয়নে ২৮ বছরে শুধুমাত্র ঢাকায় সবুজের পরিমাণ কমেছে অর্ধেকের বেশি। ফলে তাপ প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যাওয়াসহ খাদ্যশৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। হুমকিতে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের গবেষণা বলছে, ৩০৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের রাজধানীর ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশই কংক্রিটে ঢাকা। অর্থাৎ মোট আয়তনের মাত্র ৯ দশমিক ২ শতাংশ এলাকা সবুজে আচ্ছাদিত। একটি আদর্শ শহরে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সবুজের দরকার হলেও বর্তমানে আছে ৭ শতাংশ।
অপরিকল্পিত নগরায়ন ও নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে প্রায় একই অবস্থা অন্যান্য শহরাঞ্চলসহ পুরো দেশের।
পরিবেশবিদরা বলছেন, বনাঞ্চল ও সবুজের পরিমাণ আরও দ্রুত হারে কমছে। শহরাঞ্চলে বৃক্ষ কেটে রোপণ করা হচ্ছে শোভাবর্ধনকারি গাছ। নিয়ম না মেনে ভরাট করা হচ্ছে জলাশয়।
বায়ু মণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র-ক্যাপসের গবেষণা বলছে, গাছপালা ও জলাশয়ের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ২০ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২০ বছর এ ধারা চলতে থাকলে তাপমাত্রা আরো ৫ থেকে ৬ ডিগ্রি বাড়বে, বলছে ক্যাপসের গবেষণা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাছপালা বা বনভূমি কমে যাওয়ায় পরিবেশের ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক ব্যাধি বাড়িয়ে দিচ্ছে। যা জাতীয় উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করছে।
এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে জরুরি ভিত্তিতে শহরের প্রতিটি ফাঁকা স্থানে গাছ লাগানো, ছাদবাগান বাড়ানোসহ অবকাঠামো নির্মাণে পরিবেশকে গুরুত্ব দেয়ার কথাও জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
এদিকে, বিশ্বের ঐতিহ্য সুন্দরবনকে টিকিয়ে রাখতে হলে বিকল্প কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। সুন্দরবন নির্ভরশীল জেলে-বাওয়ালিদের অবাধ বিচরণে সুন্দরবন আজ হুমকির মুখে পড়ছে। এটিকে টিকিয়ে রাখতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বুক পেতে দিয়ে দেশের উপকূলকে রক্ষা করে বিশ্ব ঐতিহ্যে সুন্দরবন। বাংলাদেশ ও ভারত অংশে এই বনের বিস্তৃতি।