বৃদ্ধকে আটকে রেখে ক্ষমতা দেখালেন ইউএনও - দৈনিকশিক্ষা

বৃদ্ধকে আটকে রেখে ক্ষমতা দেখালেন ইউএনও

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

৭৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধসহ তিনজনকে হাতকড়া পরিয়ে পাঁচ ঘণ্টা ভূমি অফিসে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফিরোজা পারভীনের বিরুদ্ধে। ইউএনওর দাবি, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের হুমকি দেওয়ার মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের আটক করা হয়েছিল। পরে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁদের কেউ হুমকি দেননি।

গত বুধবার বেলা ২টার দিকে বগুড়া সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের রহমতবালা গ্রাম থেকে আটক হওয়া এই তিন ব্যক্তি হলেন রেজাউল ইসলাম (৭৩), তাঁর ছেলে রিপু (৩৫) ও রেজাউলের ভাই শহিদুল ইসলাম (৬০)। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। রেজাউল ইসলাম জানান, রহমতবালা গ্রামে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ জমি খাস দেখিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫৬টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। ওই জায়গা অনেক আগে থেকেই তাঁদের দখলে ছিল। আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থান নির্ধারণের পর মালিকানা নিয়ে ২০২১ সাল থেকে তাঁরা মামলা চালিয়ে আসছেন। গত ১৫ জুন হাইকোর্ট ওই জায়গার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে আদেশ দিয়েছেন। আইনজীবীর পরামর্শে তিনি হাইকোর্টের আদেশ সাইনবোর্ড আকারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনে স্থাপন করেন। এই কারণে ইউএনও তাঁদের আটক করেছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রেজাউল বলেন, ‘সাইনবোর্ড স্থাপনের খবর পেয়ে ইউএনও থানা-পুলিশ, এপিবিএন এবং আনসার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে যান। সেখানে উপস্থিত লোকজনকে জিজ্ঞেস করেন সাইনবোর্ড কে স্থাপন করেছে? তখন আমি বলি, আমি সাইনবোর্ড লাগিয়েছি। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমার হাতে হাতকড়া লাগাতে বলেন ইউএনও। এ সময় আমার ভাই শহিদুল ইসলাম হাইকোর্টের আদেশ দেখাতে চাইলে তাঁর হাতেও হাতকড়া লাগানো হয়। আমাদের দুজনকে আটকের কারণ জানতে চাইলে আমার ছেলে রিপুকেও হাতকড়া লাগিয়ে পুলিশের গাড়িতে ওঠানো হয়।’

রেজাউল ইসলামের ভাই শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের গাড়িতে করে আমাদের প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ডিসি অফিসে। সেখানে পুলিশের গাড়িতেই রাখা হয় আধা ঘণ্টা। এরপর শহরের বড়গোলায় সদর উপজেলা ভূমি অফিসে নিয়ে হাতকড়া পরানো অবস্থায় আটকে রাখা হয়। পরে আমাদের আইনজীবীকে ডেকে আনা হয়। তিনি এসে আমাদের আটকের প্রতিবাদ করেন এবং হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি অবগত করেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা বুধবার সকালে আমাকে মৌখিক অভিযোগ করেন, রেজাউল ও তাঁর লোকজন তাঁদের আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে চলে যেতে বলেছেন। এই অভিযোগে তাঁদের আটক করা হয়। পরে দেখা যায়, হাইকোর্ট আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গা নিয়ে স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করব। আটক তিনজন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের হুমকি-ধমকি দেবেন না মর্মে অঙ্গীকার করায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

অবশ্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে কেউ হুমকি দেননি বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা মালেকা, লিপি, ধলু মিয়া ও কুলসুম বেগম।

রেজাউল ইসলামের আইনজীবী সৈয়দ আশিফুর রহমান বলেন, সাইনবোর্ড স্থাপন করা যেতেই পারে। সাইনবোর্ডে হাইকোর্টের আদেশ সবাইকে অবহিত করা হয়েছে। এ জন্য তাঁদের হাতকড়া লাগিয়ে ধরে এনে আটকে রাখা অন্যায়। কাগজ দেওয়ার জন্য তাঁদের নোটিশ করে ডেকে আনা যেত। হাইকোর্টের নোটিশ সাইনবোর্ড হিসেবে লাগানোর কারণে এভাবে হাতকড়া পরিয়ে ধরে এনে আটকে রাখা উচ্চ আদালতকে অবমাননা করা। এ ঘটনাটি উচ্চ আদালতকে অবহিত করা হবে। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003892183303833