পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার জব্দের আগেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে নিয়েছেন―এমন তথ্য পেয়েছে দুদক। আদালত থেকে হিসাব ক্রোকের নির্দেশনার আগেই ওই সব হিসাব থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা উত্তোলনের আলামত পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিম।
দুদক সূত্র বলছে, বেনজীর, তার পরিবারের সদস্য এবং তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৩টি অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা উত্তোলনের আলামত পাওয়া গেছে।
তবে টাকার পরিমাণ বলতে পারেনি তারা।
দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক বলেন, ‘আইন ও বিধি অনুসারে যা যা করা দরকার, করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, হিসাব ফ্রিজ করার আগেই টাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কতটুকু নিয়েছে, তা অনুসন্ধান কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখবেন।’
মো. জহুরুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুধু দেশের সম্পদই নয়, আমরা বিদেশে থাকা সম্পদের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদি সম্পদ অবৈধ হয় তাহলে আদালত রাষ্ট্রের অনুকূলে তা বাজেয়াপ্ত করতে পারবেন। এ জন্য অনুসন্ধান পর্যায়ে তার (বেনজীর) সম্পদ ফ্রিজ (জব্দ) করা হয়েছে।
কারণ ফ্রিজ না করলে এসব সম্পদ হস্তান্তর হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’
এর আগে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জাসহ তাদের দুই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তলবের এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে আগামী ৬ জুন তাদের দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। তাদের দুই মেয়ে হলেন ফারহিন রিসতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর।
আরেক মেয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে তলব করেনি দুদক।
বেনজীর আহমেদ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, চাকরিজীবনের শেষ দুই বছরে অর্থাৎ আইজিপি থাকাকালেই পরিবারের সদস্যদের নামে ৪৬৬ বিঘা জমি কেনেন বেনজীর। ১৯টি প্রতিষ্ঠানে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তার পরিবার হয়ে যায় পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী পরিবার। আইজিপি পদটি যেন তার কাছে হয়ে ওঠে ‘আলাদীনের চেরাগ’।