অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও দুই মেয়েকে ডাকা হয় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। তবে তারা হাজির হননি।
তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। সোমবার (২৪ জুন) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান।
তিনি বলেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের ব্যক্তিগত শুনানির দিন নির্ধারণ করা ছিল আজ। তবে তারা উপস্থিত হননি এবং তারিখ বর্ধিত করার জন্যও কোনো আবেদন করেননি। গত বৃহস্পতিবার বেনজীর আহমেদের আবেদনের সঙ্গে তারা একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে তাদের অবস্থান বর্ণনা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অনুসন্ধানকারী দল এ আবেদনের বিষয়ে কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ ও বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের তারা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবেন বলে আমরা আশা করছি।
সচিব বলেন, অনুসন্ধান দলের প্রতিবেদন দেয়ার পরই কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে, পরবর্তী কার্যক্রম কী হবে। তাদের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে অন্যান্য ক্ষেত্রে বা অন্যান্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার কার্যক্রম যেভাবে করা হয়, ঠিক সেভাবেই কার্যক্রম চলবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আমরা আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এখানে কোনো ধরনের চাপ নেই। এনবিআরের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের তিনজনকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
সোমবার সকাল ১০টায় সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও দুই কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। বিকেল ৩টা পর্যন্ত দুদকে আসেননি বেনজীরের স্ত্রী জিসান মির্জা, দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীর।
রোববার বেনজীর আহমেদকে দুদকে হাজির হওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। তবে তিনিও দুদকে হাজির হননি।
বেনজীর আহমেদ রোববার দুদকে হাজির না হওয়ায় আইন অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানিয়েছে দুদক। একইসঙ্গে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও হারিয়েছেন।
সচিব এর আগে জানান, গত ২১ জুন বেনজীর আহমেদ কমিশনে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে সম্পদের বিষয়ে অবস্থান বর্ণনা করেন। ওই চিঠিতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় চাওয়া হয়নি।
বেনজীরের পরিবারের তিন সদস্যকে এর আগে ৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। বিদেশে থাকায় তারাও নির্ধারিত তারিখে হাজির হতে পারেননি। পরে তারা সময় চেয়ে আবেদন জানালে তাদের আবার ডাকা হয়।