বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে বাংলা বিভাগের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. নিতাই কুমার ঘোষকে আহ্বায়ক করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরীর সই করা এক অফিস আদেশে এ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির সদস্যরা হলেন, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জানুয়ারি রাতে পরীক্ষকের বিস্তারিত নম্বরপত্র ছাড়াই ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্বাক্ষর ছাড়াই উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল হক ও একই দপ্তরের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্মন এ ফল প্রকাশ করেন।
এমন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হোসেনকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ থেকে তড়িঘড়ি করে সরিয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুল হককে দায়িত্ব দেন তৎকালীন উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর প্রশাসন।
ফলাফল প্রকাশে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জানুয়ারি অধিকার সুরক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দ তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. নাজমুল হকের সঙ্গে দেখা করলে তিনি পুনরায় ফল প্রকাশের আশ্বাস দেন। কিন্তু অদ্যাবধি সেই ফলাফল সংশোধন করা হয়নি। এমনকি এ অনিয়মের ঘটনা দুবছর পার হলেও এখনো পরীক্ষার ফলাফলের বিস্তারিত কপি পরীক্ষকের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
এ অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তার তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করে লিখিত অভিযোগ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. নিতাই কুমার ঘোষ বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি কমিটি গঠন হয়েছে। তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে একটি সভা হয়েছে। তদন্ত শেষ করতে আর একটু সময় লাগবে।
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, শুনেছি এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট এখনো আমরা পাইনি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমরা অভিযুক্তদের নিয়ে বসবো। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় আনা হবে।