স্থগিত হয়ে গেলো এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বহু প্রত্যাশিত বদলির উদ্যোগ। রোববার (৫ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া ও মতামত দেওয়া একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে রিটের দালাল ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজসহ কয়েকজনের খপ্পড়ে পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন আর মিথ্যা আশ্বাস শুনেছেন বদলিপ্রত্যাশীরা। অথচ হাজার হাজার শিক্ষকের জন্য বদলিটা খুব খুব জরুরি ও ন্যায্য দাবি বলে সর্বমহলে স্বীকৃত।
কর্মকর্তারা আরো জানান, বৈঠকে অংশ নেওয়া কোনো কর্মকর্তার হাতে বদলি বিষয়ে কোনো আদালতের রুলের বা নির্দেশনার তথ্য বা কাগজ ছিলো না। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, বদলি বিষয়ে আদালতের কোনো রুলের বিষয়ে সভায় একটা শব্দও উচ্চারণ হয়নি। বরং দৈনিক শিক্ষার প্রশ্নের জবাবে তারা বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন যে বদলির নীাতমালা তৈরির বিষয়ে রুল বা আদেশ হয়েছিলো এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। তাছাড়া নিয়োগ ও বদলির বিষয়টা নির্বাহী বিভাগের। বদলি চালুর পর কেউ যদি সংক্ষুব্ধ বা বঞ্চিত হন তখন তিনি আদালতে যেতে পারেন।
কেন বদলির উদ্যোগ স্থগিত--দৈনিক শিক্ষার এমন প্রশ্নের জবাবে দুইজন কর্মকর্তা মত, ‘এতে আইনি জটিলতা বাড়বে। আইনি জটিলতায় আটকে যাবে পুরো প্রক্রিয়া। এনটিআরসিএর মাধ্যমে সরাসরি সুপারিশ পেয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের বদলির জন্য নীতিমালার খসড়া তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। এরই মধ্যে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের আগ পর্যন্ত সরাসরি কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা আইনি লড়াইয়ের হুমকি দিয়েছেন। বর্তমানে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান। তাই বদলি চালু হলে রিট করে পুরো প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হতে পারে।’
জানা যায়, ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোর মধ্যেও বলা হয়েছিলো ‘নীতিমালা তৈরি করে বদলি চালু’র। তারপর ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে একবার আলোচনা শুরু হয়েও থেমে যায় শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের বিরোধীতায়। এরপর ২০১০ খ্রিষ্টাব্দেও উদ্যোগ শুরু হয়েও থেমে যায়। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে বদলি নীতিমালা তৈরি অনেকদুর এগিয়ে গেলেও মন্ত্রণালয়ের একজন সৎ ও অমায়িক অতিরিক্ত সচিবের নামে টাকা তুলেছিলেন সিরাজ হোসেনসহ কতিপয় শিক্ষকের তৈরি ‘বদলি বাস্তবায়ন কমিটি’। রিটের দালালদের পরামর্শে কমিটি গঠন ও চরম ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। গতকাল রোববার রিট দালালরা কয়েকটি ভুইফোড় অনলাইন পত্রিকা ও ফেসবুক পেজে এডমিনরা এই মর্মে ভুয়া খবর ছড়িয়ে তাদের রিটের নামে আদায় করা টাকা হালাল করার চেষ্টা করছেন। রিট দালালরা এবার কনেটম্পট করার নামে ফের লাখ লাখ টাকা তুলবেন বদলি প্রত্যাশী সহজসরল ও ভুক্তভোগী এমপিও শিক্ষকদের কাছ থেকে। ইতিমধ্যে ২৩০ জনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন রিটের দালালরা।
রিটের দালালরা এমপিওপ্রত্যাশী ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা শিরোনামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্যাডে কয়েকটি কাগজের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেছিলো কয়েকমাস আগে।
মন্ত্রণালয় বলেছিলো, যে কাগজের ছবি ভাইরাল হয়েছে তা ভুয়া। এটি নীতিমালা বা নীতিমালার খসড়া নয়।
এদিকে চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পর এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। তারা নিজ নিজ বাড়ী থেকে ৫০০/৭০০ কিলোমিটার দূরেও চাকরি করছেন।