ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বোর্ড নির্ধারিত ফির বাইরে দুটি কলেজ এ টাকা আদায় করছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শুক্র ও শনিবার নাসিরনগর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে বিজয়লক্ষ্মী স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও নাসিরনগর সরকারি কলেজের পরীক্ষার্থীরা ব্যবহারিক পরীক্ষা দেয়।
পরীক্ষার্থীদের ভাষ্য, পরীক্ষা চলাকালীন তাদের কাছ থেকে শিক্ষকরা টাকা তুলছেন। অনেকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ব্যবহারিক পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া হতে পারে– এ আশঙ্কায় টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
জানা গেছে, চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় নাসিরনগর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে তিনটি কলেজ থেকে ৬৭১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫১ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৪৬৭ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ১৫৩ জন। শুক্র ও শনিবার ভূগোল প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় ৩০০ জন অংশ নেয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতি বিষয়ের জন্য ২০০-৩০০ টাকা নেওয়া হয়েছে।
আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে আইসিটি বিষয়ে ৬০০, মনোবিজ্ঞানে ৩০০ ও বিজ্ঞান বিভাগে ৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাসিরনগর সরকারি কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, বোর্ড থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা নিতে বহিঃপরীক্ষক (এক্সটার্নাল) আসেন। তাদের প্রতি বিষয়ে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়। তাদের ভালো মানের খাবারও পরিবেশন করতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিতে হয়।
এ বিষয়ে দুই কলেজের বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, ভূগোল ও আইসিটির শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার ফোন করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। পরে কলেজে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বিজয়লক্ষ্মী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক নির্মল চৌধুরী বলেন, আমাদের কলেজ থেকে এ বছর ৭৯ জন পরীক্ষা দিয়েছে। নীতিমালার বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই।
নাসিরনগর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জামিল ফুরকান বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় কলেজের শিক্ষকদের জানিয়ে দিয়েছি, কোনো পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায় করলে এর দায়দায়িত্ব এসব শিক্ষককে বহন করতে হবে। এখন পর্যন্ত আমার কাছে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে সবার টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ টাকা আদায় করছে– এমন তথ্য আমার জানা নেই।’
নাসিরনগর সরকারি কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ফোনে অনেকেই আমায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।