রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে আজ বিকেল থেকে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। হঠাৎ করে রাত ৮টা ২০ মিনিটে মাইকে ঘোষণা দিয়ে একদল বিক্ষোভকারী ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে সেনাবাহিনী। পরে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে সাউন্ডগ্রেনেড ছোড়া হয়। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে বিক্ষোভকারী।
তবে বিক্ষোভকারীরা আবারও জড়ো হচ্ছে বলে জানা গেছে। তারা রাষ্ট্রপতির এখনই পদত্যাগের দাবি করে বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে গণ-অধিকার পরিষদের তারেক রহমানকে দেখা গেছে। এছাড়া প্রায় ১ হাজার ২০০ বিক্ষোভকারী এতে অংশ নিয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে এক ভ্যান পুলিশ আসে। তবে আন্দোলনকারীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে তাদের বঙ্গভবনের ভেতরে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে একটি জলকামান এলেও আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে তা দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে চলে যেতে বাধ্য হয়।
এর আগে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সড়কের পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেন বিক্ষোভকারীরা। তারা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তারা কয়েকটি ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আলাদাভাবে বিক্ষোভ করেন।
‘ইনকিলাব মঞ্চ; ‘রক্তিম জুলাই-২৪’ ‘৩৬ জুলাই পরিষদ’ ‘জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদ’ ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র–জনতার মঞ্চ’ প্রভৃতি ব্যানারে অনেককে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে বঙ্গভবনের সামনে। দুপুর ২টার দিকে তারা বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
এ সময় বঙ্গভবনসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনীর এপিসি ও জলকামান মোতায়েন করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং দেশত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দেশত্যাগের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি। সম্প্রতি মানজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘(পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।’ রাষ্ট্রপতির এ মন্তব্যের পর থেকে তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে।