প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আজ তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম।
শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্রাজিল সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান।
এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলের সঙ্গে এবং আরও তিনটি মার্কোসুর (দক্ষিণ সাধারণ বাজার) দেশ—আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) বা মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে একটি উন্নয়নশীল দেশে চূড়ান্তভাবে স্নাতক হবে।
মার্কোসুর দেশগুলোর সঙ্গে পিটিএ বা এফটিএ স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেছেন। তিনি বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে কৃষি সহযোগিতা বাড়ানোর ওপরও জোর দেন। কারণ, দুটি দেশই কৃষিপ্রধান।
ব্রাজিলের বাজারে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ফার্মাসিউটিক্যালস প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ব্রাজিলের বাজারে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার কারণে ফার্মা আইটেমগুলো এখন কিছু সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি ব্রাজিলের কর্তৃপক্ষকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে বলেছেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১১ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে, যা দেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর ৩০ হাজার নতুন শিশুর জন্ম হওয়ায় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে ব্রাজিলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কিংবদন্তি এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো পেলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশের পাশাপাশি তাঁর পরিবার ও ব্রাজিলের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানান।
রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো বলেন, ব্রাজিলের বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ব্রাজিল বাংলাদেশি আরএমজি পণ্যের একটি বড় বাজার হতে পারে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে বাণিজ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।
পাওলো ফার্নান্দো দুই দেশের মধ্যে জনগণ থেকে জনগণ এবং ব্যবসায়ী থেকে ব্যবসায়ী যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস