বয়স কম দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের বোনকে স্কুলে নিয়োগ, পাচ্ছেন এমপিও - দৈনিকশিক্ষা

বয়স কম দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের বোনকে স্কুলে নিয়োগ, পাচ্ছেন এমপিও

দৈনিকশিক্ষাডটকম, কুড়িগ্রাম |

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের সরকার বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স জালিয়াতির মাধ্যমে আয়া পদে নিজের বোনকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আয়া পদে নিয়োগ পেতে প্রার্থীর বয়স অনুর্ধ্ব ৩৫ বছর হতে হবে বলে উল্লেখ আছে এমপিও নীতিমালায়। তবে নিজের বোনের বয়স আট বছর কমিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান। এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারি বেতনভাতা পাচ্ছেন সেলিনা আক্তার। ইতোমধ্যে ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রের সবকিছু অপরিবর্তিত রেখে জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স কমিয়ে অষ্টম শ্রেণির সার্টিফিকেট দিয়ে আয়া পদে চাকরি নেয় সেলিনা আক্তার নামে ওই প্রার্থী। সেলিনা আক্তার ওই প্রতিষ্ঠানে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই মে নিয়োগ পান। সে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামানের আপন ছোট বোন। সেলিনা আক্তার এমপিওভুক্ত হয়ে ইনডেক্সও (ইনডেক্স নং N56827565) পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে। 

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, তার প্রথম জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্মতারিখ ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর চাকরিরত প্রতিষ্ঠানে আবেদনকৃত জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্মতারিখ ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে ১০ ডিসেম্বর। 

অভিযোগের পরে জাতীয় পরিচয় পত্রের অসঙ্গতির বিষয়ে সেলিনা আক্তারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বয়সের গড়মিলের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান। তিনি আরো বলেন, তার বড় ভাই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান। তিনি এ সম্পর্কে বলতে পারবেন। সেলিনা আক্তারের কাছে তার পড়াশোনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি শুধু ২০০৩ সালে সিঙ্গারডাবড়ীহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পাস করেছেন বলে জানান।

এদিকে সেলিনা আক্তারের শিক্ষাজীবন নিয়ে প্রতিবেদকের হাতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। একাডেমিক তথ্য মতে সেলিনা আক্তার ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের তিস্তা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান শাখায় ফার্স্ট ডিভিশনে এসএসসি পাস করে। কাউনিয়া গাজীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও ভোকেশনাল কলেজ থেকে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পাস করেন। যার সবগুলোতে জন্মতারিখ ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে ১০ ডিসেম্বর পাওয়া গেছে। 

ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, জন্ম নিবন্ধন সূত্রে সেলিনা আক্তারের জন্মতারিখ ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর। কাজী অফিস থেকে তার বিয়ে নিবন্ধন তথ্যে পাওয়া গেছে সেলিনা আক্তারের বিয়ে হয় ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দের ২১ নভেম্বর। নিবন্ধনে উল্লেখ করা জন্মতারিখ মোতাবেক সেলিনা আক্তারের বয়স হয়েছিলো ২০ বছর। সে হিসেব মতে সেলিনা আক্তার নিয়োগ পাওয়ার দিন তার বয়স ছিলো ৩৯ বছর।  

তবে এমপিও নীতিমালা না মেনে তার বয়স ৮ বছর কমিয়ে ৩১ বছর বয়স দেখিয়ে তাকে নিয়োগ দেয়ায় পুরো এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা শ্রী বিসামিত্রসহ এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর।

বয়স জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জানার জন্য সরকার বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত যেকোনো জবাব সেলিনা আক্তার দেবেন তিনি।

তার বয়স নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আরো বলেন, তার অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদ দিয়েছে সিঙ্গারডাবড়ী হাট উচ্চ বিদ্যালয়। তার বয়স কমানো হলে তার জবাব ওই বিদ্যালয় দেবে।

এ বিষয়ে সিঙ্গারডাবড়ী হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলামের কাছে সেলিনা আক্তারের অষ্টম শ্রেণি পাসের তথ্য জানতে চাইলে তিনি সময় নিয়ে বিষয়টি দেখাবেন বলে জানান। 

রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রবের কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে অসঙ্গতি প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার ব্যবস্থা করবো। তদন্তে জালিয়াতি প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038108825683594