ভর্তিবাণিজ্য : দ্বিতীয় দফায় দুদকের মুখোমুখি আইডিয়ালের আতিকুর - দৈনিকশিক্ষা

ভর্তিবাণিজ্য : দ্বিতীয় দফায় দুদকের মুখোমুখি আইডিয়ালের আতিকুর

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ভর্তিবাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা ও সংস্কার কাজ করাসহ বিভিন্ন খাত থেকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আলোচিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দ্বিতীয় দফায় মুখোমুখি হয়েছেন। 

বুধবার (২৫ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির পরিচালক মো. সফিকুর রহমান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। টিমের অপর সদস্য সহকারী পরিচালক মাহবুবুর আলম।

আতিকুর ভিশন-৭১ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক। আজ একই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের ছেলে ও ভিশন-৭১ ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান মো. শরীফ মোস্তাক এবং আতিকুর রহমানের স্ত্রী ও কোম্পানির পরিচালক নাহিদা ইসলাম নিপাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে। তবে তারা এখনও হাজির হননি বলে জানা গেছে। 

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তিবাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা ও সংস্কারকাজ করাসহ বিভিন্ন খাত থেকে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের সঙ্গে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি গঠন ও কার্যক্রমে দুর্নীতির যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করছে দুদক। গত ১৬ মে তাদেরকে তলব করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। 

তলবি নোটিশ ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিয়ালের আলোচিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান বলেন, দুদকের চিঠি এখনো হাতে পাইনি। ভিশন-৭১ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানির বয়স ৬ বছর। আমি কোম্পানির ফাউন্ডার এমডি। শরীফ মোস্তাক একসময় চেয়ারম্যান ছিলেন, এখন নেই। বর্তমানে আমার নেতৃত্বে কর্মকাণ্ড চলছে। আফতাব নগরে বেশকিছু কাজ করেছি, এখনো কিছু কাজ চলছে। 

তিনি বলেন, ভিশন-৭১ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড আমার প্রতিষ্ঠান। এটা অস্বীকার করছি না। তবে আমি ঋণ নিয়ে কাজ করছি। ব্যবসা করা কোনো অপরাধ নয়। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ব্যবসার মাধ্যমে আমি একটা অবস্থান তৈরি করেছি। এ বিষয়টি অনেকের ভালো লাগছে না।

ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ প্রসঙ্গে আতিক বলেন, আমাকে বলা হচ্ছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা। অথচ আমি প্রশাসনিক কর্মকর্তা নই। ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। দুদক পুরো তালিকা নিয়েছে, সেখানে আমার কোনো রেফারেন্স পায়নি। কোনো কাগজপত্রে আমার সই নেই। তাহলে কীভাবে ভর্তি বাণিজ্য করলাম? আয়কর নথিতে যে সম্পদের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেটাই আমার সম্পদ। এর বাইরে কোনো সম্পদ নেই।

আতিকুর রহমানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ‘ভিশন-৭১ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানির খোঁজ পায়। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কোম্পানিটির সঙ্গে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের ছেলে শরীফ মোস্তাক, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান ও তার স্ত্রী নিপার সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। কীভাবে কোম্পানিটি চলছে, এর মূলধন কোথা থেকে এল, ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয়ে আর্থিক লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেলে হয়েছে কি না এবং কোম্পানি সংশ্লিষ্ট সব নথিপত্র যথাযথ রয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয়ে জানতেই তাদের তলব করা হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির অভিযোগে প্রথমবারের মতো আতিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। ওই বছরের ৮ আগস্ট দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে বিদেশযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ২০২১ সালের ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

আতিকুর রহমান খান ২০০৪ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগ দেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এমপিওভুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কোনো পদ নেই। অবৈধভাবে এ পদ সৃষ্টি করে অধ্যক্ষ শাহান আরা তাকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেশের ১৫টি ব্যাংকে আতিকুর রহমানের ৯৭টি অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অ্যাকাউন্টে ২০০৭ সাল থেকে ২০২১ সালের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ১১০ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৯২ টাকা লেনদেন হয়েছে।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অবৈধ ভর্তিসহ সব বাণিজ্যের প্রধান আতিকুর রহমান। তিনটি ক্যাম্পাসের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর ড্রেস তৈরি, ক্যান্টিন, লাইব্রেরি সবই তার নিয়ন্ত্রণে। এমনকি স্কুলের সামনে ফুটপাতে শতাধিক দোকান বসিয়েও তিনি আয় করেন মোটা অংকের টাকা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে যত ধরনের কেনাকাটা, উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ হয়, তার সবই করেন আতিক ও তার লোকেরা। দরপত্রেও অংশ নেয় নামে-বেনামে তারই প্রতিষ্ঠান। সেখানে চলে বড় ধরনের লুটপাট। গত ১২ বছরে প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং কর্মচারী নিয়োগে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশন এলাকাভূক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ - dainik shiksha সিটি কর্পোরেশন এলাকাভূক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ দেশের সব ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশনা - dainik shiksha দেশের সব ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশনা সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ - dainik shiksha সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত আতঙ্কে হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha আতঙ্কে হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে নিহত শিক্ষার্থীর পরিচয় মিলেছে - dainik shiksha ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে নিহত শিক্ষার্থীর পরিচয় মিলেছে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066800117492676