সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের জন্য নতুন নিয়ম কার্যকর করতে পারে রাজ্য সরকার। চাকরি জীবনে পাঁচ বছর বা নির্দিষ্ট সময় ধরে গ্রামে গিয়ে শিক্ষকতা করতে হবে শিক্ষকদের। এই নিয়মই চালু করা হতে পারে বাংলায়। রাজ্যের শিক্ষানীতিতে এমনই প্রস্তাব রয়েছে। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যের শিক্ষানীতিকে অনুমোদন করা হয়েছে। শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাত ঠিক রাখতে এমন ভাবনা রাজ্য সরকারের।
রাজ্যের শিক্ষানীতির খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে যেমন গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করা বাধ্যতামূলক, ঠিক তেমনই গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষকতা করতে হবে শিক্ষকদের। শিক্ষক নিয়োগের সময়ই এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
অন্য দিকে, বাংলা ভাষাকে আরও গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ইংরেজিকেও। শিক্ষানীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলা এবং ইংরেজি পড়তেই হবে পড়ুয়াদের। তৃতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা, হিন্দি এবং সংস্কৃতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রাজ্যের শিক্ষানীতিতে। প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা পড়াতে হবে। সেই অনুযায়ী পাঠ্যক্রম তৈরি করতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে দশম শ্রেণির পরীক্ষা তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষা রাখার সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে রাজ্যের শিক্ষানীতিতে।
রাজ্য সরকারের স্কুলগুলিতে সেমেস্টার পদ্ধতি চালুর ভাবনাও তুলে ধরা হয়েছে রাজ্যের শিক্ষানীতিতে। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে সেমেস্টার পদ্ধতি চালু করতে পারে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। আগামী তিন বছরের মধ্যে অষ্টম শ্রেণি থেকেই সেমেস্টার পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে।
কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব হয়েছিল তৃণমূল সরকার। জাতীয় শিক্ষানীতিকে ‘তুঘলকি’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। জাতীয় শিক্ষানীতির কিছু প্রস্তাব নিয়েছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু হয়েছে রাজ্যে।
সকল পড়ুয়ার জন্য একটি ‘ইউনিক আইডেন্টেটি কার্ড’ তৈরি করা হবে। ওই কার্ডের সঙ্গে থাকবে মেমরি চিপ। তাতে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পডুয়াদের পরীক্ষার ফলাফল নথিবদ্ধ করা থাকবে।
কেন্দ্রীয় অনুদান পাওয়া যায় না বলে অনেক সময়ই ক্ষোভপ্রকাশ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার নিজস্ব তহবিল তৈরি করবে রাজ্য। যার নাম ‘স্টেট রিসার্চ ফান্ড’।