টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) সব রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহা. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১-এর ধারা ৪৭(৫) কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তার রাজনৈতিক মতামত পোষণের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন না করে তার চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ কতে হবে, তবে তিনি তার এই মতামত প্রচার করতে পারবেন না বা তিনি নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না, এবং ১২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড ও একাডেমিক কাউন্সিলের আভ্যন্তরীণ সদস্যরা, সব ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, প্রভোস্ট, প্রক্টর ও অফিস প্রধানদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে গত সোমবার সদ্য পদত্যাগ করা ভাইস-চ্যান্সেলর-এর অনুপস্থিতিতে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ আর এম সোলাইমান এক জরুরি সভা ডাকেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহা. তৌহিদুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এই সভায় শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত ২ দফা দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব প্রকার ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর রাজনীতি নিষিদ্ধ বন্ধের দাবি জানায়। শিক্ষার্থীদের দাবি শুনে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর রাজনীতি নিষিদ্ধ বিষয়ে সম্মতি জানান।
ক্যাম্পাসে সব রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বস্তি প্রকাশ করছে। অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইবাদত আলী জানান বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমার মতে এটা একটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের দাবি মানার জন্য। ছাত্র রাজনীতির নাম করে বিগত সময়ে যে শোষণ করা হয়েছে তা মাভাবিপ্রবিতে আর ফিরে না আসুক।
রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মো. রাজু সরকার। সে জানায়, আমরা চাই না আমাদের ক্যাম্পাসের কারো পরিনতি আরবার ফাহাদের মতো হোক। ছাত্র রাজনীতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলাদলি বা গোষ্ঠীবাদ সৃষ্টি করে, যা তাদের মধ্যে ঐক্যহীনতা ও শত্রুতা বাড়ায়।