নেত্রকোনার বাজুর বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠিত শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ দিন ধরে চলছে কমপ্লিট শাটডাউন। এরমধ্যে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রেজারারের পদত্যাগ ও পিআরওর অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এতে বক্তব্য দেন- বাংলা বিভাগের শিক্ষক নাজমুল হাসান, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান হাফছা আক্তার, সিএসসি বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল সিয়াম, আনোয়ারুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক শোভন রায়, শিহাব উদ্দিন সুমন, সায়েদাতুস সাবা, জান্নাত শারমিন মুন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মো. রাজিব মিয়া, মো. সোহেল রানা, জেবুন্নাহার বর্ণ, সংযুক্তা পাল প্রমুখ।
সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ১১ আগস্ট পদত্যাগ করেন নেত্রকোনায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম কবীর। কিন্তু দাবি অনুযায়ী, ট্রেজারার পিএম সফিকুল ইসলামের পদত্যাগ এবং জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক এনামূল হক ওরফে আরাফাতে বহিষ্কার না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ১৪ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি কমপ্লিট শাটডাউনে চলে যায়। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত উত্তরণের পথও খুলছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীরা গত ৮ আগস্ট শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়’, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, দুই মাসের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাস চালুসহ ১১ দফা দাবি পূরণের নিশ্চয়তা দিতে উপাচার্যকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন।
শিক্ষার্থীদের এসব দাবির মুখে ভিসি গত ১১ আগস্ট রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান। এরপর শিক্ষার্থীরা ট্রেজারার সফিকুল ইসলামের পদত্যাগ এবং জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক এনামূল হকের বহিষ্কার দাবিতে সরব হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সংহতি জানান; কিন্তু ওই দুই কর্মকর্তা পদত্যাগ না করায় শিক্ষার্থীরা কমপ্লিট শাটডাউন দেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাজিব মিয়া, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত রেজুয়ান জয়।
তারা বলেন, ‘ট্রেজারারের পদত্যাগ এবং জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালককে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন থাকবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে এক মাস চলে গেলেও উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় ট্রেজারার আত্মগোপনে থাকাসহ বিভিন্ন কারণে সমস্ত কার্যক্রমে অচল বিশ্ববিদ্যালয়। সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছেন না কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এতে সৃষ্টি হচ্ছে প্রশাসনিক জটিলতা। সংকট নিরসনে সহজ পথও খুলছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু কাজ রয়েছে। যা উপাচার্য ও ট্রেজারার ছাড়া সম্ভব নয়। আমরা খুবই বিপদে আছি। জটিলতা নিরসনের পথ তৈরি হচ্ছে না। ট্রেজারার মহোদয় পদত্যাগও করছেন না, ক্যাম্পাসেও আসছে না। আর জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালককে তো আমার একক সিদ্ধান্তে বহিষ্কার করা যায় না। নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পযন্ত এ সংকট সহজে কাটানো যাবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রেজারার পিএম সফিকুল ইসলাম ও পিআরও এনামুল হকের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।