খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ভর্তিতে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। লটারিতে ভর্তি নিশ্চিত করতে ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি করে ৮টি আবেদন করেন তিনি। সৌভাগ্যবশত তার ৮টি আবেদনই লটারিতে ওঠে। গত সোমবার ফলাফল ঘোষণার পরই প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষও ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ও ৮টি আসন শূন্য করে অপেক্ষমাণ তালিকায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সার দেশের মতো সোমবার বিকেলে সরকারি করোনেশন বালিকা বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির সাধারণ তালিকায় প্রাতঃ শাখায় ১৯, ৩২, ৩৭, ৮১, ৮২, ৯০, ১০৮ ও দিবা শাখায় ২৫ নম্বর ক্রমিকে একই দম্পতির শিশুকন্যা সুযোগ পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে ওই শিশুর চারটি স্থানে নাম সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। ৮টি আবেদনে শিশুর দুটি ছবি, মোট চারটি মোবাইল নম্বর ও আটটি জন্মসনদ ব্যবহার করা হয়েছে।
অভিভাবক ইয়াসিন আরাফাত, কাজী ফারুক, অজয় রায়সহ অন্যরা বলেন লটারি ভর্তিতে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরকারি স্কুলে পড়ার সুযোগ হয়েছে। কোচিং-ভর্তি বাণিজ্য থেকে রেহাই মিলছে। কিন্তু এভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্নীতির শিক্ষা দিয়ে ভর্তির সুযোগ নেওয়া গুরুতর অন্যায়। শিশুটির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট করা হচ্ছে। শুধু শিশুর অভিভাবকই নয়, ৮টি সনদ করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত। যাতে ভবিষ্যতে এমন কাজ আর কেউ করার সাহস দেখাবে না।
সরকারি করোনেশন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্র্রধান শিক্ষক মাকামী মাকসুদা বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা ভর্তি কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। এখানে আটটি আসন অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। একই সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হচ্ছে। অভিভাবকরা অনৈতিকভাবে এতগুলো জন্মসনদ তৈরি করবে এমনটি ভাবা যায় না।
ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারহানা নাজ বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গতকাল মঙ্গলবার অভিভাবকদের দেওয়া মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
খুলনা জেলা প্রশাসক ও ভর্তি কমিটির সভাপতি খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সুযোগ পেয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।