দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: সরকারি অনুদানের টাকা উঠানোর ছয়মাস পরেও শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার সভাপতি ও সুপারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মোহাম্মদীয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সাবেক সুপার জানে আলম নিজামী ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরিদ আহমেদ।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ লাখ টাকা উঠানোর ছয়মাস পরও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দেননি। ফলে ওই মাদরাসার শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা আছেন বিপদে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের বরাদ্দ সরকারি অনুদানের টাকা আদৌ পাবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
এদিকে ওই মাদরাসার অভিযুক্ত সুপার টাকা নিয়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে অন্য একটি মাদরাসায় সুপার হিসেবে যোগদান করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)-এর আওতাভুক্ত এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বাস্তবায়নাধীন পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইনসটিউশনস (পিবিজিএসআই) স্কিমের স্কুল/মাদরাসা/কলেজ ব্যবস্থাপনা জবাবদিহি অনুদান হিসেবে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোহাম্মদীয়া মহিলা দাখিল মাদরাসাকে ৫ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়।
যা গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর একটি প্রাইভেট ব্যাংকের নাজিরহাট কৃষি/ এসএমই শাখায় মাদরাসার নামে খোলা যৌথ অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
অনুদানের টাকা জমা হওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় মাদরাসার সুপার দুই লাখ টাকা এবং ২১ দিনের মাথায় মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দুই অংকে যথাক্রমে দেড় লাখ ও এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।
এদিকে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি মাদরাসার সাবেক সুপার জানে আলম নিজামী চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বটতলী শাহ মোহছেন আউলিয়া (রহ.) ইয়াকুবিয়া দাখিল মাদরাসা সুপার হিসেবে যোগদান করেন।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ও সহকারী মৌলভী হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সহকারী মৌলভী মাওলানা এবং সহকারী শিক্ষিকা (গণিত) মিসেস সাজেদা বেগম জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৫ লাখ টাকা সরকারি অনুদান উত্তোলনের অর্ধেক বছর পর হলেও আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এখনো পাননি।
ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে মাদসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরিদ আহমেদ জানান, তিনি এসবের কিছুই জানতেন না। তার স্বাক্ষর জাল করে সাবেক সুপার জানে আলম নিজামী মাদরাসার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকাগুলো উত্তোলন করেছেন।
মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে সাবেক সুপার অভিযুক্ত জানে আলম নিজামী বলেন, আমি কোনো স্বাক্ষর জাল করিনি। তবে, বরাদ্দকৃত অর্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে বণ্টনের জন্য আমি ও সভাপতি সময় করতে পারিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদরাসাটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা এনামুল হক জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিষয়টি সুরাহাকল্পে মাদরাসার সাবেক সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে।