অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার হায়দারগঞ্জ তাহেরিয়া আর এম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ মজুমদার বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারীদের দাবি , গত ১৫ বছরে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীর মাধ্যমে মাদরাসা পরিচালনা করছেন অধ্যক্ষ। তার বিরুদ্ধে গত ৭ নভেম্বর আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর অভিযোগ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগে তারা বলেন, লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার হায়দারগঞ্জ তাহেরিয়া আর এম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ মজুমদার গত ১৫ বছরে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীর মাধ্যমে মাদরাসা পরিচালনা করছেন। তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মাদরাসায় ছাত্রলীগের কমিটি করা হয় এবং ছাত্রলীগের যাবতীয় রাজনৈতিক কার্যকলাপ করার সুযোগ দেওয়া হয়। অন্যান্য ছাত্রসংগঠনকে ঢুকতে বা কোন কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হয়নি।
অভিযোগে তারা বলেন, আব্দুল আজিজ মজুমদার অধ্যক্ষ হওয়ার পরপর মাদরাসার ছাত্রসংসদ বন্ধ করে দেন এবং বিগত ১৫ বছর ছাত্রসংসদ নির্বাচন করতে দেওয়া হয়নি। তিনি অসংখ্য পিটিয়ে আহত করেছেন, বিনা অপরাধে বহিষ্কার করেছেন, শিক্ষকদের নাজেহাল করেছেন, জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক দিয়েছেন, অভিভাবকদের নাজেহাল করেছেন এবং মাদরাসার ছাত্র ও প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার সব অন্যায়-অত্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগী ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকরা কমিটিকে অবহিত করলেও কোন প্রতিকার পাননি।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ মজুমদারের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন। তারা গভর্নিং বডির নিকট স্মারকলিপি পেশ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ১ সেপ্টেম্বর মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভায় মাদরাসার অধ্যক্ষকে এক মাসের ছুটির দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ছাত্রদের অভিযোগ তদন্ত করতে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অদ্যাবধি ওই কমিটি হয়নি।
চিঠিতে ছাত্ররা আরো অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষের কার্যকলাপের প্রতিবাদ করলেই তিনি পুলিশের ভয় দেখাতেন এবং বলতেন আমি মন্ত্রী নসরুল হামিদের লোক, ওলামা লীগের সদস্য। তিনি সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট অর্থের বিনিময় বিক্রয় করতেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গভর্নি বোডির সদস্য সৈয়দ তাহের ইজ্জদ্দীন জাবেরী এই প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমান অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ নানা দুর্নীতিতে জড়িত। গত ১৫ বছরে তিনি আর্থিক অনিয়মসহ অনেক দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্রসহ এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু সভাপতি আল্লামা আনোয়ার হোসেন তাহের আল জাবের আল মাদানীর কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত করতেও অধ্যক্ষ বাধা দিচ্ছেন।
দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল আজিজ মজুমদার এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি করি নাই। গভর্নর বডি আমার পক্ষে আছে। যারা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিচ্ছে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।