মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় শহরের সবেধন নীলমণি   - দৈনিকশিক্ষা

মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় শহরের সবেধন নীলমণি  

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: মাধ্যমিকের ফল যে ভাল হবে এবং তার নম্বর ৬৮০-র আশপাশে থাকবে, সে ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত ছিলেন কলকাতার কমলা গার্লস স্কুলের এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সোমদত্তা সামন্ত। কিন্তু তিনি যে প্রথম দশের মধ্যে জায়গা করে নেবেন, সেটা একেবারেই ভাবেনি। তাই গত বৃহস্পতিবার সকালে ফল ঘোষণার সময়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় যখন মেধা তালিকায় থাকা নামগুলি পড়ছিলেন, তখন টিভি দেখেননি সোমদত্তা। টিভিতে চোখ রেখেছিলেন তার মা-বাবা। পর্ষদ সভাপতি মেধা তালিকায় সোমদত্তার নাম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেল গোটা বাড়ির পরিবেশ। সোমদত্তা জানতে পারলেন, ৬৮৪ পেয়ে তিনি রয়েছেন দশম স্থানে। বস্তুত, প্রথম দশে থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে কলকাতা থেকে একমাত্র তিনিই  রয়েছেন। যা এই সাফল্যের আবহেও প্রশ্ন তুলছে, কলকাতায় বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ার সুযোগ আছে বলেই কি সরকারি স্কুল থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন বেশির ভাগ পড়ুয়া?

তবে, এই ফলে স্বভাবতই ভীষণ খুশি সোমদত্তা বলেন, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, মা-বাবা, গৃহশিক্ষকের কাছে আমি ঋণী। তাঁরা ছাড়া এই ফল সম্ভব হতো না। নির্দিষ্ট সময় বেঁধে পড়িনি। তবে, স্কুলে যা পড়িয়েছে, সেই পড়া ফেলে রাখিনি। গত দেড় বছর মোবাইল ফোনের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিলো না। শুধু যেটুকু পড়াশোনার জন্য লাগে, সেটুকুই ব্যবহার করেছি।

ওই ছাত্রী জানান, উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়বেন তিনি। ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে। তবে, পড়তে পড়তে যদি কোনও বিষয় ভাল লেগে যায়, উচ্চশিক্ষায় সেটি নিয়েও পড়তে পারেন।

ফল প্রকাশের দিন দুপুর তিনটে নাগাদ সোমদত্তা বাড়ি থেকে স্কুলে আসতেই তাকে নিয়ে হইচই পড়ে যায়। অন্য অভিভাবকেরা প্রায় কোলে তুলে তাকে ভেতরে নিয়ে যান। কমলা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিঠু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সোমদত্তা ভাল ফল করবে জানতাম। মেধা তালিকায় স্থান পাওয়াটা খুবই আনন্দের। প্রতি বারই আমাদের স্কুলের খুব ভাল ফল হয়। কিন্তু একটুর জন্য হয়তো মেধা তালিকায় থাকতে পারি না। এ বার সেই আক্ষেপ ঘুচল। আমি ভীষণ খুশি।

সোমদত্তার বাবা গোপালচন্দ্র সামন্ত পেশায় স্কুলশিক্ষক। তিনি বলেন, মেয়ে ওড়িশি নৃত্যও শেখে। কিন্তু মাধ্যমিকের জন্য গত দু’-তিন মাস তেমনভাবে অনুশীলন করতে পারেনি। মেয়ে বলেছে, পড়াশোনার সঙ্গে নাচও চালিয়ে যাবে। ও যেটা নিয়ে পড়তে চায়, সেটাই পড়বে।

তবে, প্রথম দশে থাকা ৫৭ জনের মধ্যে কলকাতা থেকে মাত্র এক জন পরীক্ষার্থী থাকায় এই প্রশ্নও উঠছে যে, শহরের অন্যতম ঐতিহ্যশালী স্কুল, যেমন হিন্দু, হেয়ার, বেথুনের নাম মেধা তালিকায় নেই কেন? বেথুন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শবরী ভট্টাচার্য বলেন, কলকাতা থেকে মাত্র এক জনের নাম মেধা তালিকায় থাকলেও সামগ্রিক দিক থেকে এখানে পাসের হার খুব ভাল। সেই নিরিখে কলকাতা তৃতীয়। যা প্রমাণ করছে, কলকাতার সরকারি স্কুলে পড়াশোনা ভাল হয়। তবে এটা ঠিক, সেখানে পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন ঘটালে ফল আরও ভাল হবে।

হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বলেন, আমাদের স্কুলের ফল নিয়ে পর্যালোচনার জন্য একটি টাস্ক ফোর্স তৈরি করছি। আমাদের স্কুলের যে ছাত্র ক্লাসের পরীক্ষায় কোনও একটি বিষয়ে ১০০-র মধ্যে ১০০ পাচ্ছে, সে কী ভাবে ওই বিষয়েই মাধ্যমিকে কম নম্বর পাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখাই আমাদের উদ্দেশ্য।

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বললেন, সার্বিকভাবে কলকাতার ফল কিন্তু খুব ভাল। আমাদের স্কুলে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন ২৪ জন। দু’জন পরীক্ষার্থী ৯০ শতাংশের থেকে এক নম্বর করে কম পেয়েছেন।

কলকাতার স্কুলের নাম কেন মেধা তালিকায় থাকছে না কিংবা থাকলেও কেন কম, সেই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, কলকাতার সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলি সম্পর্কে অভিভাবকদের আগ্রহ জন্মানো দরকার। এক সময়ে রামকৃষ্ণ মিশন বা সেন্ট জ়েভিয়ার্স স্কুলের সঙ্গে সরকারি স্কুলকে যোগ করে মানোন্নয়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, এটি সরকারি নীতির বিষয়। সেই সময়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তা হলে কি সরকারি স্কুলগুলি বেসরকারিকরণের দিকে যাচ্ছে? এ বার মেধা তালিকায় এক জন এসেছে। আগামী দিনে সেই সংখ্যা যাতে বাড়ে, সেই চেষ্টা আমরা করব। বোর্ডের সঙ্গেও কথা বলব। সূত্র: আনন্দবাজার

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট বেকারদের সবচেয়ে বড় কারখানা, মন্তব্যের জেরে সভায় বাগ্‌বিতণ্ডা - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট বেকারদের সবচেয়ে বড় কারখানা, মন্তব্যের জেরে সভায় বাগ্‌বিতণ্ডা গবেষণা কাজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর চৌর্যবৃত্তি - dainik shiksha গবেষণা কাজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর চৌর্যবৃত্তি বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর - dainik shiksha বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর প্রতারণা এড়াতে সতর্ক করলো ঢাকা শিক্ষা বোর্ড - dainik shiksha প্রতারণা এড়াতে সতর্ক করলো ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ঢাবির সিনেটে সর্বজনীন পেনশন বাতিলের প্রস্তাব - dainik shiksha ঢাবির সিনেটে সর্বজনীন পেনশন বাতিলের প্রস্তাব ৮৫ শতাংশ ভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রিধারীরা শেখাচ্ছেন ইংরেজি-গণিত - dainik shiksha ৮৫ শতাংশ ভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রিধারীরা শেখাচ্ছেন ইংরেজি-গণিত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা’ - dainik shiksha এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা’ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0098869800567627