ঘটনাটি ঘটেছে জাপানে। দেশটির এক চিকিৎসক অতিরিক্ত কাজের চাপে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছে জাপানের কর্মপরিবেশ ও বাড়তি কাজের সংস্কৃতি।
জানা গেছে, ওই চিকিৎসকের নাম তাকাশিমা শিংগো। তিনি দেশটির কোবে শহরের কোনান মেডিকেল সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক ছিলেন। কিন্তু গত বছরের মে মাসে তিনি আত্মহত্যা করেন।
ওই চিকিৎসকের পরিবারের দাবি, কর্মক্ষেত্রে এক মাসে ২০৭ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হয়েছিল তাকাশিমাকে। সেই কারণে তার ভেতরে অবসাদ জন্ম নেয়। আর থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ২৬ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক।
তাকাশিমার আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আত্মহত্যার আগে ওই হাসপাতালে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। এমনকি টানা তিন মাস সাপ্তাহিক ছুটিও পাননি তাকাশিমা। এতে অবসাদ পেয়ে বসেছিল। যার পরিণতি তার আত্মহত্যা।
সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকেরর মা জুঙ্কো তাকাশিমা বলেন, আত্মহত্যার আগে কর্মক্ষেত্রে কঠিন সময় পার করতে হয়েছিল তার ছেলেকে। এমনকি সহকর্মীরা তাকাশিমাকে খুব একটা সহায়তা করতেন না।
তিনি আরও বলেন, “ছেলে আমাকে বলেছিল- কেউ আমার কষ্টটা দেখে না। আমি মনে করি, কাজের কঠিন পরিবেশই ধীরে ধীরে আমার ছেলেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার ছেলে একজন ভালো চিকিৎসক হতে চেয়েছিল। সে আর তা হতে পারবে না। আর কোনও দিন রোগীদের জীবন বাঁচাতে, সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে না।”
জুঙ্কো তাকাশিমা বলেন, “আমি চাই না, আর কারও বুক খালি হোক। আশা করছি, জাপানে চিকিৎসকদের জন্য কাজের পরিবেশ উন্নত করা হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।”
চিকিৎসকের এক ভাই বক্তব্যে বলেন, “মাসে ২০০ ঘণ্টার বেশি বাড়তি কাজ করা অবিশ্বাস্য। আমার মনে হয় না, ওই হাসপাতাল তাদের কর্মীদের দিকটা কখনও অগ্রাধিকার দিয়ে ভেবেছিল।”
অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে কোনান মেডিকেল সেন্টার। এক সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, কাজে এসে অনেক চিকিৎসক পড়াশোনা করেন, ঘুমিয়ে নেন। তাই বাড়তি সময়ের পুরোটাই তারা কাজে যুক্ত থাকেন, এমনটা বলা যাবে না।
হাসপাতালটির একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেন, বাড়তি সময় কাজ করার জন্য তাকাশিমা আত্মহত্যা করেছেন, এটা তাদের মনে হয় না। তাই এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও প্রতিক্রিয়া জানাবে না।