নীলফামারীর ডিমলায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে একসঙ্গেই পরীক্ষা দিয়েছিলেন মা ও মেয়ে। এতে সফলতার সঙ্গেই উত্তীর্ণ হয়েছেন মা মারুফা আক্তার। তবে ফেল করেছেন মেয়ে শাহী সিদ্দিকা।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, মেয়ে শাহী সিদ্দিকা ফেল করলেও ৪.৩৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন মা মারুফা আক্তার। শাহী সিদ্দিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবং মারুফা আক্তার একই কলেজের বিএম শাখা থেকে পরীক্ষায় বসেন।
মারুফা আক্তার বলেন, বিয়ের ১৫ বছর পেরিয়ে গেছে। চার ছেলে-মেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ালেখার সুযোগ হয়নি। একপর্যায়ে স্বামীর উৎসাহে বড় মেয়ের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করি। সমাজে আর দশটা মানুষের মতো যাতে নিজেকে একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে পারি, সেই কারণেই এই বয়সে কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি, পরীক্ষাও দিয়েছি।
মারুফা আক্তারের পাসের খবরে দারুণ খুশি পরিবারের সবাই। ভালো ফল করায় তাকে বাহবা দেন সহপাঠী ও কলেজের শিক্ষকেরাও।
জানা গেছে, মারুফা আক্তারের বাবার বাড়ি ডিমলা উপজেলার নাউতারা গ্রামে। বিয়ে হয় একই উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের পুন্যাঝার গ্রামের সাইদুল ইসলামের সঙ্গে। স্বামী পেশায় মৎস্য ব্যবসায়ী। তাদের চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে শাহী সিদ্দিকা বড়। দ্বিতীয় ছেলে দশম শ্রেণি, তৃতীয় ছেলে অষ্টম শ্রেণি ও ছোট মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান বলেন, মারুফা একজন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মানুষের ইচ্ছাশক্তি থাকলে লেখাপড়ায় বয়স কোনো বাধা নয়, সেটাই প্রমাণ করেছেন তিনি। মারুফা আক্তারের এমন সাফল্য অনেককে অনুপ্রাণিত করবে। আমরা তার সাফল্য কামনা করি।