মিতু হত্যায় বাবুল আক্তারের বিচার শুরুর আদেশ - দৈনিকশিক্ষা

মিতু হত্যায় বাবুল আক্তারের বিচার শুরুর আদেশ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

চট্টগ্রামের মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন সোমবার দুই পক্ষের শুনানি শেষে সাত আাসমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ৯ এপ্রিল দিন ঠিক করে দেন।

২০১৬ সালে মিতু খুন হওয়ার পর তার স্বামী বাবুলই এ মামলা করেছিলেন। নানা নাটকীয়তা শেষে পিবিআইর তদন্তের পর এখন তিনিই এই মামলার আসামি।

মামলার বাকি আসামিরা হলেন- মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা ও খায়রুল ইসলাম।

কারাবন্দি বাবুলকে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য এদিন বেলা ১২টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়। হাজির করা হয় মুছা ও কালু ছাড়া বাকি চারজনকেও। কালু পলাতক, মুছা রয়েছেন নিখোঁজ। আসামিদের মধ্যে ভোলা জামিনে থাকা অবস্থায় আদালতে হাজিরা দেন।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ মামলার সাত আসামির মধ্যে কার বিরুদ্ধে কোন ধারায় কেন অভিযোগ গঠনের আবেদন করছেন, তা আদালতে উপস্থাপন করে।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, “আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেছিলাম। শুনানি শেষে আদালত সাতজন আসামির বিরুদ্ধেই অভিযোগ গঠন করেছেন।”

তিনি বলেন, “দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা করে মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল। যখন আসামি বাবুল আক্তার ঢাকায় ছিলেন, তখন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছিল।

“আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা ও মোতালেব মিয়া ওয়াসিমকে পূর্ব থেকে ভাড়া করে ও অস্ত্র সংগ্রহ করে এই হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করেন প্রধান আসামি বাবুল। এরজন্য আগে বিভিন্ন সময় বৈঠক করে। পরে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তড়িঘড়ি করে নিজে মামলা করেছিল।”

আসামি বাবুলের বিরুদ্ধে ৩০২, ২০১ এবং ১০৯ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। 

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বিচার কাজ পরিচালনার সুবিধায় আসামি বাবুলকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার আদেশ দেয় আদালত।

এর আগে কাঠগড়ায় থাকা বাবুল নিজে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে না রাখার বিষয়ে বক্তব্য দেন। পরে বিচারক বলেন, “মামলার বিচার কাজের জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হলো। চিকিৎসা বা অন্য কোনো বিষয়ে আপনারা জেল কর্তৃপক্ষ এবং প্রয়োজনে আদালতের কাছেও পরে আবেদন করতে পারবেন।”

বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, “আমরা এই মামলার অভিযোগ থেকে বাবুল আক্তারের ডিসচার্জ (অব্যাহতি) চেয়ে আবেদন করেছিলাম। এর পক্ষে আমরা যুক্তিও উপস্থাপন করেছি। আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছেন।

“আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এডিসি প্রসিকিউশনের কক্ষে বাবুল আক্তারের সাথে এক ঘণ্টা কথা বলার অনুমতি দিয়েছেন। উনার সাথে আলাপের পর আমরা করণীয় ঠিক করব।”

এর আগে দুপুরে আদালতে ৪৫ মিনিটের দীর্ঘ শুনানিতে বাবুলের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “এ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য সাফিসিয়েন্ট ডকুমেন্ট নেই। প্রথমত এ ঘটনায় প্রথম মামলাটির বাদি ছিলেন বাবুল আক্তার নিজে। সেটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে দ্বিতীয় আরেকটি মামলা করেন। পরে আবার দ্বিতীয় মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশে প্রথম মামলায় অধিকতর তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিল।

“তাহলে মধ্যবর্তী ছয় মাস সময়ে দ্বিতীয় মামলায় সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত প্রথম মামলায় ব্যবহৃত হতে পারে না। দ্বিতীয় মামলায় দেওয়া জবানবন্দি কী করে প্রথম মামলায় আসল?”

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “১১ জন সাক্ষী শুরুতে ২০১৭ সালে একবার আবার ২০২১ সালে দ্বিতীয়বার ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিলেন। দুটো পরস্পর বিপরীত জবানবন্দি৷ যেমন ভিকটিমের বাবা মোশাররফ হোসেনের জবানবন্দি। প্রথমবার তিনি বলেছিলেন- মিতু বাবুলের দাম্পত্য জীবন ছিল ‘সুখের’। পরেরবার হয়ে গেল ‘তিক্ত’।

“ঘটনার পর যে ২৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, তা বর্তমানে মামলার নথিতে নেই। কারণ তারা বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। ঘটনার সময় বাবুল ছিলেন ঢাকায়। মুছাকে দিয়ে হত্যা করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে, মুছা কোথায়?”

“গায়ত্রী নামের একজনের সাথে সম্পর্কের কারণে স্ত্রী মিতুকে হত্যা করিয়েছেন বলে অভিযোগ। গায়ত্রী কোথায়? তাহলে কীভাবে বিচার করবেন?”

শুনানিতে পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, “আসামিপক্ষ প্রশ্ন তুলেছেন এক ঘটনায় দ্বিতীয় মামলা নিতে পারে কি না? হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে অনেক রায় আছে দ্বিতীয় এফআইআর নিতে পারে। তবে এ মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে প্রথম মামলার ভিত্তিতে।

“কীভাবে পরিকল্পনা ও টাকা লেনদেন করে হত্যাকাণ্ডটি ঘটান হয়, তা দীর্ঘ সময়ের তদন্তে বের হয়েছে। আসামিপক্ষ যেসব তথ্য উপস্থাপন করেছেন, তার বেশিরভাগ ট্রায়ালের বিষয়। এটা বিচারে প্রমাণ হবে। বাবুল আক্তার মামলার শুরুতে তড়িঘড়ি করে বাদী হওয়ার মূল কারণ, কেউ যাতে বুঝতে না পারে।”

এইচএসসি পরীক্ষা ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত - dainik shiksha এইচএসসি পরীক্ষা ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত দাবি পূরণ হয়েছে, এখনও কীসের আন্দোলন: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha দাবি পূরণ হয়েছে, এখনও কীসের আন্দোলন: প্রধানমন্ত্রী আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিলেন শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিলেন শিক্ষামন্ত্রী ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও ফেসবুক নিয়ে বিটিআরসির নির্দেশনা - dainik shiksha ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও ফেসবুক নিয়ে বিটিআরসির নির্দেশনা কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট - dainik shiksha কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৭ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৭ জন চিহ্নিত স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর - dainik shiksha স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর মেট্রোস্টেশনে সম্ভাব্য ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকা - dainik shiksha মেট্রোস্টেশনে সম্ভাব্য ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063810348510742