দৈনিক শিক্ষাডটকম, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে গত সোমবার দুপুরে এমপিওভুক্তির জন্য দেয়া ঘুষের টাকা ফেরতের দাবিতে রোকেয়া বেগম (৫৫) নামে এক শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন স্বজনরা। পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ঘুষের টাকা তিন দিনের মধ্যে ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করলে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। অবশেষে সেই ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ইউএনও'র উপস্থিতিতে ঘুষের ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা রোকেয়ার স্বামী ও স্বজনদের কাছে ফেরত দেন জিসিজি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
আরো পড়ুন : ঘুষের টাকা ফেরত পেতে শিক্ষিকার লাশ নিয়ে স্কুলে স্বজনেরা
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেন বলেন, উপজেলার ‘জিসিজি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষিকা রোকেয়া খাতুনকে এমপিওভুক্তি করে দেয়ার কথা বলে কয়েক ধাপে ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি। পরে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সেই শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে তার স্বজনরা বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করলে কমিটি তিন দিনের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি সেই টাকা আমার উপস্থিতিতেই রোকেয়ার স্বামী ও স্বজনদের কাছে ফেরত দিয়েছেন।
ইউএনও আরও বলেন, শিক্ষক নিয়োগে প্রতারণা ও বেতনহীন ২০ বছরের পারিশ্রমিক চেয়ে রোকেয়ার স্বামী গত বুধবার জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে কোনও তদন্তের নির্দেশনা আসলে সেই অনুযায়ী তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে কাজিপুর উপজেলার গোদাগাড়ী চকপাড়া গাড়াবের বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘুষের টাকা ফেরতের দাবিতে ওই শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন স্বজনরা। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘুষের টাকা তিন দিনের মধ্যে ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করলে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
মৃত স্কুল শিক্ষিকা রোকেয়া বেগম উপজেলার গাড়াবেড় গ্রামের খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তিনি জিসিজি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শাখার ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন।
স্বজনদের অভিযোগ, এমপিওভুক্তির কথা বলে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি কাজিপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ বাবলু ও প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম দফায় দফায় তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চার লাখ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন।