মোতাহের হোসেন চৌধুরীর মুত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ ও লেখক ছিলেন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে তার মৃত্যু হয়। মোতাহের হোসেন চৌধুরী তার রচনায় সংস্কৃতি, ধর্ম, মানবতাবোধ ও মানুষের জীবনাচরণের মৌলিক বিষয়গুলো সংজ্ঞায়িত ও উন্মোচিত করতে চেয়েছেন এবং বিচিত্র ও সুন্দরভাবে বাঁচার মধ্যে মহত্তম জীবনের সন্ধান করেছেন।
নোয়াখালী জেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে তার জন্ম। তিনি কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আইএ ও বিএ পাস করেন। এরপর ইউসুফ হাইস্কুলে একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার পেশাগত জীবন শুরু হয়। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় এমএ পাস করেন। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে লেকচারার পদে যোগদান করেন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশভাগের পর চট্টগ্রাম কলেজে যোগদান করে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। এ কলেজে কথাসাহিত্যিক আবুল ফজলকে তিনি সহকর্মী হিসেবে পেয়েছিলেন।
মুক্তবুদ্ধিচর্চার প্রবক্তা, উদার মানবতাবাদী ও মননশীল প্রবন্ধকার হিসেবে মোতাহের হোসেন চৌধুরীর বিশেষ খ্যাতি আছে। তিনি ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন এবং এর সভা ও সম্মেলনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। তার রচিত ‘আমাদের দৈন্য’, ‘আদেশপন্থী ও অনুপ্রেরণাপন্থী’ ও ‘মুসলমান সাহিত্যিকদের চিন্তাধারা’ প্রবন্ধ যথাক্রমে সাহিত্য সমাজের পঞ্চম (১৯৩১), ষষ্ঠ (১৯৩২) ও অষ্টম (১৯৩৪) বার্ষিক সম্মেলনে পঠিত হয়। এছাড়া তার ‘রবীন্দ্রনাথ ও বৈরাগ্যবিলাস’ প্রবন্ধটি সমাজের মুখপত্র শিখার পঞ্চম বর্ষে প্রকাশিত হয়।
মোতাহের হোসেনের প্রবন্ধের গদ্যশৈলীতে প্রমথ চৌধুরীর এবং মননে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব খেয়াল করা যায়। সংস্কৃতি কথা (১৯৫৮) তার প্রধান প্রবন্ধ গ্রন্থ। দ্বিতীয় গ্রন্থ সুখ (১৯৬৫) বার্ট্রান্ড রাসেলের Conquest of Happiness গ্রন্থের এবং তৃতীয় গ্রন্থ সভ্যতা (১৯৬৫) ক্লাইভ বেল-এর Civiliszation গ্রন্থের ভাবানুবাদ।