ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরীক্ষার ফিসহ সবধরণের ফি ব্যাংকের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে জমা দিতেন শিক্ষার্থীরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো শিক্ষার্থীদের। মান্ধাতার আমলের ফি প্রদান পদ্ধতির পরিবর্তে খুব শীঘ্রই অনলাইন পদ্ধতি চালু হচ্ছে। ভর্তি, পূণঃভর্তি, একাডেমিক, হল, পরিবহন, কাগজপত্র উত্তোলন সহ সকল ফি মোবাইল ফেনের মাধ্যমে প্রদান করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এটির বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি অবসান হবে।
শনিবার ( ১৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আইসিটি সেল সূত্রে জানা যায়, এটি বাস্তবায়নে নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কেন্দ্রীয় আইটি টিম, ব্যাংকের ইবি শাখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমন্বিতভাবে কাজ করছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে এটির পরীক্ষামূলক কাজ চলমান রয়েছে।
জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সকল ফি সরাসরি অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। কক্ষ সংকীর্ণ হওয়ায় ব্যাংকের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ফি দেওয়ার সময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ফি দিতে গিয়ে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। তীব্র গরমে দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকার ফলে অনেকসময় শিক্ষার্থীরা অসুস্থও হয়ে পড়েন। নতুন ভর্তি হতে আসা দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। তাই শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে ফি প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও তা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। তবে এবার তা আলোর মুখ দেখছে।
আইসিটি সেল ও ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, পদ্ধতিটি পুরোপুরি চালু হলে শিক্ষার্থীরা মোবাইলের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপ, মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা অন্য ব্যাংকের মাধ্যমেও অনলাইনে ফি পরিশোধ করতে পারবে। এক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যাংকে একাউন্ট না থাকলেও শিক্ষার্থীরা স্টুডেন্ট আইডি দিয়ে লগইন করে ফি দিতে পারবেন। অগ্রণী ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে ফি প্রদান করলে আলাদা চার্জ কাটবে না। তবে মোবাইল ব্যাংকিং বা অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করলে ১.৪ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জ কাটবে।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ দুই সেশনের শিক্ষার্থীদের ডাটা ব্যাংকে পাঠিয়েছে। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অনলাইন পদ্ধতি চালুর বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। বাকি ডাটাগুলোও পর্যায়ক্রমে সংযুক্ত করা হবে। ইতিমধ্যে ব্যাংকের আইটি টিম একটি ‘ডেমো’ প্রস্তুতের কাজ করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হলেই ব্যাংক পরবর্তী কার্যক্রম করবে।
অগ্রণী ব্যাংক ইবি শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার অসীম কুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের আইটি টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ফি দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকে একাউন্ট করার প্রয়োজন নেই। প্রতিজন শিক্ষার্থীকে আলাদা আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে।আশা করছি আগামী মাসেই আমরা এটি চালু করতো পারবো।
আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, এই কাজটি করার জন্য আইসিটি সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমরা ইতোমধ্যে ডাটাবেজ প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্টদের দিয়েছি। অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে সকল বিভাগ, হল, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে একটি আওতায় আনা হবে। আমাদের কাজ আমরা শেষ করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যাংকে সব ডেটা দিয়ে দিয়েছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি শিক্ষার্থীরা এটির সুবিধা পাবে।