দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনা নদীকে ছোট করা হবে না, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এই নিশ্চয়তা প্রদান করায় রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (১২ জুন) এই আদেশ দেন। যমুনা নদীকে ছোট করার পরিকল্পনা নেই বলে এর আগে হাইকোর্টকে এক প্রতিবেদনে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডে পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট অরবিন্দ কুমার রায়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন- সহকারী এটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ ও সহকারী এটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজওয়ার পার্থ।
যমুনা নদীকে ছোট করার পরিকল্পনা নেই বলে এর আগে হাইকোর্টকে এক প্রতিবেদনে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। আদালতে দাখিল করা ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) ফর যমুনা রিভার সাসটেইনবল ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-১ এ বলা হয়, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদী সংকোচনের কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রকল্পের আওতায় নদী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের সংস্থান রাখা হয়েছে।
মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশের আলোকে নদী ব্যবস্থাপনার জন্য ভবিষ্যৎ কৌশল কর্মপরিকল্পনা ও অবকাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (এএইচওয়াইডিটেক জিওমরফিক লিমিটেড অ্যান্ড সিইজিআইএস) কর্তৃক দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রস্তাবিত প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত অবকাঠামো বাস্তবাযনের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানি কৃষি, মৎস্য সম্পদ এবং জীববৈচিত্র ও বাস্তুসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে না। তদপুরি ভবিষ্যতে যমুনা নদীর ডাউনস্ট্রিমের পরিবেশ এবং যমুনা সেতু ও পদ্মা সেতুসহ অন্যান্য স্থাপনার ওপর ও বিরূপ প্রভাব পড়বে না। উপরন্তু, প্রস্তাবিত প্রকল্পে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য বিস্তারিত সমীক্ষাসহ পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব নিরুপণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওই সময়ে আরও বিস্তারিতভাবে এসব প্রভাব নিরুপণ করা হবে।
গতকাল আদালতে প্রজেক্ট ফাইলসহ যাবতীয় নথি দাখিল করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আইনজীবী এডভোকেট অরবিন্দ কুমার রায় এসব নথি দাখিল করেন।
এর আগে, গত ২৮ মে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনা নদীকে ছোট করার প্রজেক্ট ফাইল তলব করেন হাইকোর্ট। ১০ দিনের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত সব নথি আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
গত ১২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘যমুনা নদীকে ছোট করার চিন্তা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।